ঝালকাঠিতে স্বেচ্ছায় রক্ত দান-সহ সর্বদা দরিদ্র মানুষের সেবায় নিবেদিত এক নিরলস দম্পতি

ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি:-

ঝালকাঠি জেলাধীন রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের পালট গ্রামের বাসিন্দা সমাজসেবক ও সংবাদকর্মী মোঃ আলমগীর শরীফ ও তাঁর সহধর্মিণী কন্ঠশীল্পী মোসাঃ ছালমা বেগম (বাউল ছালমা) দীর্ঘদিন যাবত নিরলস মানবসেবায় কাজ করে আসছেন বলে যথেষ্ট প্রসংশা রয়েছে এলাকায়।


আলামগীর শরীফ ও ছালমা বেগম অসহায় মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াতে গিয়ে অনেক সময় চরম বিপদের সম্মুখীন হয়েও বিরত থাকেননি অসহায় ও দরিদ্র মানুষের সেবা করা থেকে। অনেক সময় গভীর রাতেও মানুষের অসুখ বিসুখ ও অন্য কোনো বিপদের কথা শুনে দুর দুরন্তর ছুটে যান এই দম্পতি।


বিশেষ করে দরিদ্র রোগীদের চিকিৎসা সেবাটা-ই বেশী করে থাকেন এরা। ইতোমধ্যে এই দম্পতি জেলার ০৪ টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অসহায় বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী ও হতদরিদ্র মানুষদের সেবায় নিবেদিত। যেমন:- অসহায় এরাতন বিবি, সখিনা খাতুন, আশ্রাব আলী, পিতা-মাতাহীন লাইলি আক্তার, একই সাথে জন্ম দেওয়া তিন সন্তানের জননী হতদরিদ্র কুরছিয়া বেগম, দরিদ্র কৃষক লাল ফুকারের স্ত্রী, শাখাওয়াত আলীর মেয়ে, ছোবাহান হাওলাদার, স্বামী পরিত্যক্ত ফাতিমা বেগম, মরিয়ম বেগম, জান্নাতি আক্তার, প্রতিবন্ধী মনোয়ারা বেগম, হনুফা বেগম, রিজিয়া বেগম, আমজাদ হোসেন, দরিদ্র ইকবাল হোসেন, ফজলুল হক শরীফ, সিরাজুল ইসলাম, রিয়া আক্তার, শারমিন আক্তার, প্রতিবন্ধী অহিদুল ইসলাম, ইলিয়াস হোসেন, সীমা খান, চিরু বালা, পানবল্লব, গোলাপী রানী, নিখিল চন্দ্র, মনির হোসেন, কাদের, আরিফ, চান মিয়া ও অগ্নিদগ্ধ খাদিজা সহ প্রায় হাজার অধিক মানুষের চিকিৎসা ও অন্যান্য ভাবে নিঃস্বার্থ শারীরিক সহযোগিতা করে আসছেন আলমগীর শরীফ ও ছালমা বেগম। বর্তমানে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় বরিশাল বিভাগের “শ্রেষ্ঠ জয়িতা” হিসাবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত ও বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের নিয়মিত কণ্ঠশিল্পী এবং রাস্ট্রিয় রানার্সআপ “অপরাজিতা” হিসেবেও স্বীকৃত প্রাপ্ত ছালমা বেগম। জানাজায় ছালমা বেগমের সকল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে সহযোগীতা করছেন আলমগীর শরীফ।

এছাড়াও ছালমা বেগম আত্মকর্মী সৃষ্টির লক্ষে প্রতিষ্ঠা করেছেন “ছালমা যুব সংস্থা ও শিল্পীগোষ্ঠী” যে সংগঠনে একজন দক্ষ সংগীত ব্যাক্তিত্ব সাধারণ সম্পাদক সাবিনা ইয়াসমিন-সহ প্রায় অর্ধশত সমাজসেবী সদস্য রয়েছে, যারা সর্বদা মুমূর্ষু রোগীদের প্রয়োজনে সেবা প্রদান ও রক্তদানে প্রস্তু থাকেন। সংগঠনটি শিল্পীরা বর্তমানে বাংলাদেশ টেলিভিশনে নিয়মিত দলীয় সংগীত পরিবেশন করে আসছে।
এবিষয়ে রাজাপুর উপজেলায় স্থাপিত বহুল আলোচিত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান “সোহাগ ক্লিনিক” এর প্রবীণ ও মানবিক ম্যানেজার মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ প্রতিবেদককে জানান যে, রাজাপুরে সোহাগ ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মালিক কর্তৃপক্ষ-সহ সকল স্টাফরা-ই জানেন যে, আলমগীর শরীফ ও তাঁর স্ত্রী ছালমা বেগমের পাঠানো রোগী গরীব ও অসহায় এবং সামান্য খরচে বা বিনাখরচে চিকিৎসা করাতে হবে। তিনি আরো বলেন যে, উক্ত দম্পতি এই ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার ১৯ বছর যাবত প্রায় ৪/৫ শত রোগী সল্পখরচে ও বিনাখরচে চিকিৎসা করাইয়াছেন।

এছাড়াও আমার জানামতে আমাদের সোহাগ ক্লিনিকের প্রধান পরিচালক মোঃ আহসান হাবিব সোহাগ সাহেবের থেকে অনেক সময় আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে অগ্নিদগ্ধ খাদিজাসহ অনেক গুরুতর রোগী উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও বরিশালে নিয়ে চিকিৎসা করাইয়াছেন এই দম্পতি। জানা যায় আলমগীর শরীফ ছোট বেলা থেকেই বিভিন্ন ধরনের সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি নিজের পিতা-মাতা ও বৃদ্ধ শতবছর বয়েসী নানীর যত্নে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করিয়াছেন। তিনি একজন পরিছন্ন সংবাদকর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। এছাড়ও সমাজের বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষকে বিভিন্ন কর্মে উদ্ভুদ্ধ করে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে।
আলমগীর শরীফ প্রতিবেদককে বলেন, আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।


ছালমা বেগম জানান যে, আমার কাছে অর্থ নাই, তার পরও অসহায় মানুষের সুখে দুখে পাশে থাকতে ভালোলাগে তাই করে যাচ্ছি, আমার জন্য দোয়া করবে। তবে আমিও মানুষ থেকে অনেক ভালোবাসা পাইছি এবং পাচ্ছি।

Leave a Reply