সুন্দরগঞ্জে ছিটমহল ও চর প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

বিদ্যুৎ চন্দ্র বর্মন, স্টাফ রিপোর্টারঃ

গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জে বিলুপ্ত ছিটমহল ও চর উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। চর ও ছিটমহলবাসীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর গবাদি-পশু ও হাঁস-মুরগি পালনে প্রাণিসম্পদের লাগসই প্রযুক্তি বিষয়ে সচেতন করে তুলতে এই প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করে সুবিধাভোগীর মাঝে হাঁস, মুরগী, ভেড়া ও কবুতর বিতরন করা। কিন্তু সরকারের এসব প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ আছে, সম্প্রতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নদী বিধৌত চর ও বিলুপ্ত ছিটমহল উন্নয়ন প্রকল্পের ৪০ জন সুবিধাভোগীর জন্য বিতরণী সামগ্রী ক্রয়ে হরিলুট করা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগসাজশ করে প্রকল্পের অর্থ লোপাট করেছে প্রাণিসম্পদ অফিস। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের আওতায় একটি ৮৪ জনের তালিকা তৈরি করা হয়। এতে প্রথম পর্যায়ে ৪০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের মাঝে ভেড়া, ছাগল, ঘর ও মিল্কিং মেশিন বিতরণের কথা ছিল। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রকল্প পরিচালক উপস্থিতিতে প্রথম পর্যায়ে ৪০ জনকে ভেড়া বিতরণের জন্য ডাকা হয়। প্রত্যােক সুবিধাভোগী দুইটি করে ভেড়ী ও একটি ভেড়া পাবে। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে বিতরণ সামগ্রি নিয়ে। ম্যানুয়াল অনুযায়ী বিতরণের জন্য ভেড়ার ওজন ৮ কেজি হওয়ার কথা থাকলেও প্রতিটির ওজন ছিল ৪/৫ কেজি। ফলে এসব বেড়া নিতে অপারগতা প্রকাশ করে সুবিধাভোগীরা। বাধ্য হয়ে তা ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন স্থানীয় সাংসদ ও প্রকল্প পরিচালক।

প্রাণিসম্পদ অফিস সুত্রে জানা গেছে, বিলুপ্ত ছিটমহল ও নদী বিধৌত চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে গরীব, অসহায়, দুস্থ, ভ‚মিহীন ও বিধবা নারীদের স্বাবলম্বী করতে ২০১৮ সালে প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এই প্রকল্পটি প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের লগসই প্রযুক্তি বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে উদ্যােগ গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। প্রকল্পের সুবিধাভোগী নির্বাচন করতে ২০১৯ সালে ৮৪ জনের তালিকা তৈরি করা হয়। এদের মধ্যে সংশোধিত প্রথম পর্যায়ে ৪০ জন গরীব ও দুস্থ নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ভেড়া বিতরণের জন্য ডাকা হয়। এতে দৃশ্যমান অনিয়ম হওয়ায় উপকরণ বিতরণ সম্ভব হয়নি। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী উপকরণ সরবরাহের শর্ত পুরণ করতে না পারায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তা ফেরতের নির্দেশ দেন পিডি।

এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অনিয়েমর সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুমনা জানান, প্রকল্পের উপকরণ সরবরাহের শর্ত ভঙ্গ হওয়ায় সেগুলো ফেরত পাঠানো হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক ডা. নন্দ দুলাল টিকাদার। তিনি জানান, এসব প্রকল্পে অনিয়মের সুযোগ নেই। ম্যানুয়াল অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ করতে না পারলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এছাড়াও ভেড়া ক্রয়ে অনিয়ম হওয়ায় তা ফেরত পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply