সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধিঃ
হাজরাকাটি মৌজার অর্ধ শতবিঘা সরকারি সম্পত্তি প্রভাবখাটিয়ে খেয়েছেন গিলে তালা উপজেলার হাজরাকাটি মৌজার “ক” তপশীলের ১৪ একর ৩৯ শতক সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বাবলু ও তার আপন ভ্রাতা গৌতম ঘোষের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে অনৈতিক উপায়ে সম্পত্তি রেকর্ডকারি তালা সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার মোঃ জাকারিয়া খাঁন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বাবলু ও তার সহদর গৌতম ঘোষের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন সহ ডিপি খতিয়ান বাতিল পূর্বক সরকারের নামে নালিশী সম্পত্তি রেকর্ডভুক্ত করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে ইতোমধ্যে অভিযোগ প্রেরন করা হয়েছে।
সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের হাজরাকাটি মৌজা, জে এল নং-১৪৫ বুজরত খতিয়ান-২৯৩২ ডিপি নং-৬০৩ এস এ খতিয়ান-১৮০ সাবেক দাগ-১৯৪৪,হাল দাগ নং-৩৭৯৩ জমির পরিমান ১ এক ৫ শত এর মধ্য ৩৫ শতক। সাবেক দাগ -১৯০৭,হাল দাগ-৩৬৮৩ জমি পরিমান-৬ একর ৭৩ শতক এর মধ্য ৪ একর ৪৯ শতক। সাবেক দাগ- ১৯২৫ হাল দাগ-৩৭৩৫ জমির প্ররিমান ২ একর এর মধ্য ২ একর, এসএ খতিয়ান নং-১৮০,সাবেক দাগ নং- ২০০৯,হাল দাগ-৪৮১১,জমির শ্রেনী গেজেটভুক্ত খাল শ্রেনী। রেকর্ড করেছে বিলান হিসেবে ১ একর ৩৮ শতক। এসএ খতিয়ান-১৮০,এসএ খতিয়ান-৭৫৭ সাবেক দাগ নং ২০১৮,হাল দাগ-৪৮২২,জমির পরিমান ৫ একর ১২ শতক এর মধ্য ৩ একর ৪২ শতক রেকর্ড করেছে। সাবেক দাগ নং-১৯৫২ হাল দাগ-৩৮০৭ জমির পরিমান ২ একর ৮৬ শতক এর মধ্য হইতে ১ একর ৯০ শতক রেকর্ড করেছে সর্বমোট ১৪ একর ৩৯ শতক জমি ১৯৯০ সালে মাঠ জরিপে বিকাশ ঘোষ পিতা-মৃত.শৈলেন্দ্র ঘোষ, গ্রাম হাজরাকাটি , থানা-তালা, জেলা-সাতক্ষীরা। তিনি মাঠ জরিপে আমিন দ্বারা নিজ নামে রেকর্ড প্রস্তুত করান। বিকাশ ঘোষের মৃত্যুয়ান্তে তার দু,পুত্র গৌতম ঘোষ ও খলিলনগর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান প্রণব কুমার ঘোষ হাজরাকাটি মৌজার ৩০ ধারায় আপত্তি মামলা দায়ের করে গেজেটভূক্ত সরকারি খাস শ্রেনীর ১-৩৮ শতক জমি শ্রেনী বিলান দেখাইয়া আপত্তি অফিসার এর সাথে যোগসাজশে পিতার নাম কর্তন পূর্বক দুই ভাইয়ের নামে রেকর্ড করান। প্রায় অর্ধশতবিঘা সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করতে বাঁধা না দিয়ে স্থানীয় তৌশিলদার তাতে সহায়তা করেছেন। উক্ত সম্পত্তি ২০১২ সালে ২৯ শে মার্চ সরকার “ক” তপশিল ভুক্ত করে সরকারী সম্পত্তি মর্মে গেজেট প্রকাশ করেছেন। এবং ১৯৭০ সাল এর পুর্বে বা পরে সরকার জনগনের মাঝে ডি,সি আর মুলে এই সম্পত্তি বন্দোবস্ত গ্রহন করে ভোগ দখল করতেন। তালা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো: জাকারিয়া খান অত্র নালিশী মৌজা প্রিন্ট পর্চা তেরীর লক্ষে খুলনায় প্রেরনের পূর্বে উক্ত মৌজার সকল খতিয়ান ২০২২ সালে যাচাইকালে সরকারী গেজেটভুক্ত “ক” তপশিলের সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড ধরা পড়ে।
উক্ত হাজরাকাটি মৌজায় সরকারি “ক” তপশীল ভূক্ত ৬৮ একর ৩৮ শতক গেজেটভূক্ত সম্পত্তি। উক্ত গেজেটভূক্ত সম্পত্তির মধ্যে ব্যক্তিমালিকানায় রেকর্ডভূক্ত সম্পত্তি কর্তন করে সরাকারের নামে রেকর্ড হয় কিন্তুু নালিশী খতিয়ানটি ব্যক্তি মালিকানায় রাখা হয়। উক্ত প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা প্রণব ঘোষ বাবলু সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও স্থানীয় এম,পি দের নাম ব্যাবহার করে সরকারের এই কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করাতে সক্ষম হন।
তালা সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার ভারপ্রাপ্ত মোঃ জাকারিয়া খান সরকারী “ক” তপশীলের গেজেট ভুক্ত সম্পত্তি প্রিন্ট এর জন্য জোনাল সেটেলেমেন্ট খুলনা অফিসে প্রেরণ করেছেন। নালীশি ১৪ একর ৩৯ শতক সম্পত্তি গৌতম ঘোষ ও প্রণব ঘোষ বাবলু পিতা বিকাশচন্দ্র ঘোষ, গ্রাম হাজরাকাটি তালা, সাতক্ষীরা নামে সরকারের বিপুল পরিমান সম্পত্তি ব্যক্তিমালিকানায় রেকর্ড করা আইন সম্মত হয়েছে ? না বেআইনী ভাবে সরকারী সম্পত্তি আত্মসাৎ করা হচ্ছে সেটি খতিয়ে দেখার জন্য জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিযোগ কারিরা অনুরোধ জানিয়েছেন।
এবিষয়ে এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে প্রেরিত অভিযোগপত্র মহা- পরিচালক ভূমি জরিপ অধিদপ্তর বরাবর এবং অনুলিপি প্রেরন করা হয়েছে মাননীয় ভূমিসচিব ভূমিমন্ত্রনালয়,চেয়ারম্যান,দূর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)সেগুনবাগিচা ঢাকা, জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার খুলনা বিভাগ,খুলনা, জেলা প্রশাসক,সাতক্ষীরা, সভাপতি তালা প্রেসক্লাব,তালা সাতক্ষীরা বরাবর।
নালিশী সরকারি ক তপশীল ভূক্ত অর্ধশতবিঘা সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্য জরিপে অবৈধ ভাবে দুভাইয়ের নামে রেকর্ড করা হয়েছে। অভিযোগ পত্রে আরও উল্লেখ থাকে, সরকারি অর্ধশতবিঘা সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ডিও মালিক খলিলনগর ইউ,পি চেয়ারম্যান এবং সরকার দলীয় প্রভাবশালী নেতা এবং এম,পির কাছের লোক। আবেদনকারির পক্ষ যদি আবেদন পত্রে নাম দেয় তাহলে মিথ্যা মামলায় হয়রানি হতে হবে। সেকারন তারা নাম দেয়নি।
এ প্রসংঙ্গে খলিলনগর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান প্রনব ঘোষ বাবলু জানান, নালিশী জমির কাগজপত্র রয়েছে সরকারের সম্পত্তি রেকর্ড করা হয়নি।
তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, সরকারী সম্পত্তি তছরুপ হতে দেওয়া হবে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা পরিষদ প্রশাসক শেখ মোঃ রাসেল জানান,সরকারী সম্পর্ত্তি যদি কেউ ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করে নেয় সেটি অব্যশই তহশীলদারের মাধ্যমে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সরকারী সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।
সরকারি প্রায় অর্ধশতবিঘা “ক” তপশীলভূক্ত কতক খালশ্রেনীর সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সরকারের দূর্নীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসক, মহা- পরিচালক ভূমি জরিপ অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ কে সত্যতা যাচাই করার জন্য তদন্ত পূর্বক ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।