দুমকি উপজেলা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার প্রধান ডাকঘরে বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা পেতে পলিথিন টাঙ্গিয়ে চলছে দৈনন্দিন কার্যক্রম।
দুমকি উপজেলা সদরের একমাত্র ডাকঘরটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটচ্ছে। বৃষ্টির পানি থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র রক্ষা করতে ভিতরে পলিথিন টাঙ্গিয়ে চলছে দাপ্তরিক কাজ। ফলে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও গ্রাহকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটির দেয়ালের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। ছাদ, ভিম ও দেয়ালের বিভিন্ন স্থানের পলেস্তারা উঠে গিয়ে রডগুলো বের হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা পেতে পলিথিন টাঙ্গিয়ে চলছে দৈনন্দিন কার্যক্রম।
দুমকি উপজেলা সদরে একতলা বিশিষ্ট প্রধান ডাকঘরের ভেতরে মূল কক্ষে ডাকঘরের কার্যক্রম চলে। সামনের দক্ষিণ অংশে ব্যাংক এশিয়া এবং উত্তর পার্শ্বে কক্ষে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চলমান রয়েছে। আর এ ৩টি স্তরে সেবা নিতে প্রতিদিন শত শত মানুষের আনাগোনা এই ডাক ঘরে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা দ্রুত ডাক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। রানার ইব্রাহিম হাওলাদার বলেন, সবসময় আমরা আতঙ্কে থাকি এই বুঝি পলেস্তারা খসে পড়লো।
ডাকঘরের ভিতরে পরিচালিত ব্যাংক এশিয়া’র ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আহসান রনি জানান, ডিজিটাল ডাক সার্ভিসের পাশাপাশি সব ধরনের ডাক সার্ভিস দেয়া হয়। এ ছাড়াও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৬ মাসের কোর্সে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও চালু রয়েছে। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়মিত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।
উল্লেখ্য বিভিন্ন কর্মকান্ডের সাথে গতিশীল রেখে ডাক বিভাগের অর্থায়নে উপজেলা সদরে ১৯৮১ সালের ১২ জানুয়ারি ভবণটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন কেবিনেট সচিব এম কেরামত আলী। ১৯৮৭ সালে নির্মাণ করা হয় একতলা ভবন। এছাড়াও মূল ভবনের পিছনে একই ছাদে তিন কক্ষ বিশিষ্ট পোস্ট মাস্টারের জন্য ফ্যামিলি কোয়ার্টারটি দীর্ঘদিন যাবৎ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পোস্ট অফিসের চারপাশে খালি জায়গা অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে থাকায় ময়লা আবর্জনার দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। পোস্ট অফিসে সেবা নিতে আসা মো. রুবেল হোসেন নামের এক শিক্ষক বলেন, আমি এখানে বেশ কয়েক বছর আসা-যাওয়া করি।
ছাদের বিভিন্ন স্থানে ফাটলের কারণে এখানে ঢুকতেই ভয় লাগে। বৃষ্টিতে মাথার উপর পলিথিন টাঙ্গিয়ে অফিসের কার্যক্রম করে। ফ্লোরে পানি জমে যায়। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি যাতে দ্রুত পোস্ট অফিসের ভবনটি সংস্কার অথবা নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। এব্যাপারে দুমকি ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার মজিবুর রহমান বলেন, ছাদ দিয়ে পানি পড়ে তাই পলিথিন টাঙ্গিয়ে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। ছাদ ও ওয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দৈনন্দিন কার্যক্রম করতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশায় আছি। অনেক লেখালেখির পর ৩/৪ বছর পূর্বে ছাঁদ মেরামত করা হলেও কিছু দিন পর আবার ছাঁদ দিয়ে পানি পড়ছে। এব্যাপারে ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল পটুয়াখালী বরাবর বেশ কয়েকবার লিখিত আবেদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এব্যাপারে ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল পটুয়াখালী মাহাবুবুর রহমান বলেন, দুমকি উপজেলার ডাকঘর টি দীর্ঘদিন যাবৎ জরাজীর্ণ অবস্থায় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এবাপারে ডিজি বরাবর লিখিত ভাবে অবগত করা হয়।