পটুয়াখালী ভার্সিটির, উপ-রেজিস্টার: “ডিসি আমার বন্ধু, আমার লেভেল সম্পর্কে সবার জানা উচিৎ”

দুমকী উপজেলা( পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

:বিশ্ববিদ্যালয় অফিস চলাকালীন সময়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন বাদ দিয়ে সালিশ বানিজ্যে ব্যাস্ত সময় পার করছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-রেজিস্টার মাওলানা, ড, মোঃ শফিকুল ইসলাম। জেলার ৩১নং ধনখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সদস্য নির্বাচনে তিনি প্রভাব বিস্তার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন নিয়ে তার এমন অপেশাদার আচরণের কারণে এলাকায় বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। 

রবিবার (০৩ নভেম্বর) সকালে পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইটিবাড়িয়া ইউনিয়নের ৩১নং ধনখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির জমিদাতা সদস্য নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধের কারনে তদন্ত কর্মকর্তাদের সাথে স্থানীয়দের কথোপকথন হচ্ছে। উক্ত বৈঠকে মাওলানা, ড, মোঃ শফিকুল ইসলাম নিজেকে পবিপ্রবি’র শিক্ষা বৃওি শাখার, উপ -রেজিস্ট্রার হিসেবে দাবি করেন এবং জমিদাতা ওয়ারিশ সোহাগের পক্ষে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেন। তার উপস্থিতে এলাকায় বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে গণমাধ্যমকর্মিরা তার কাছে আগমনের উদ্যেশ্য জানতে চাইলে সে প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং  সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দেন। 

এসময় মাওলানা, ড,মোঃ শফিকুল ইসলাম  বলেন, আমি একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র অফিসার। আপনি জিজ্ঞেস করেন, আমি এখানে কেন এসেছি। এটা কোনো প্রশ্ন হলো? আমি আমার শশুর বাড়ির এলাকায় এসেছি। এখানের ডিসি সাহেব আমার বন্ধু মানুষ, আমার লেভেল সম্পর্কে এখানের সবার জানা উচিৎ। এখানের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমার বন্ধু, ওনাদের(তদন্ত কর্মকর্তা) বস। এসময় তিনি আরও বলেন তুমি কি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি হেমায়েত জাহানকে চেনো? তুমি তার কাছে জিজ্ঞেস কইরো আমার কথা, আমি কে?

লেবুখালী ইউপির সাবেক কাজী, মাওলানা, ড,, মোঃ শফিকুল ইসলামের বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান বলেন, তিনি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অথবা কোনো ধরনের ছুটি ছাড়াই তিনি এখানে গিয়েছেন। আর তিনি বিনা ছুটিতে সেখানে গিয়ে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদের প্রভাব খাটিয়ে ব্যাক্তিগত অথবা কারো পক্ষ নিয়ে এধরণের কর্মকাণ্ড করে থাকে তাহলে অবশ্যই এটা নিন্দনীয় কাজ। এই বিশ্ব বিদ্যালয়ের সুনাম, সুখ্যাতি যদি কেউ ব্যাক্তিগত কারনে নষ্ট করতে চায় অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

অপর দিকে বিদ্যালয়ের জমিদাতা আব্দুল লতিফ হাওলাদারের নাতি মেহেদী হাসান শিবলী বলেন, এই স্কুলের এডহক কমিটির জমিদাতা সদস্য নিয়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত একটি মতবিরোধ হয়ে আসছিলো।  তাই আজ উপজেলা শিক্ষা অফিরের পক্ষ থেকে দুইজন তদন্ত কর্মকর্তা আসেন। ওখানে শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যাক্তি এসে পটুয়াখালী ভার্সিটির উপ -রেজিস্ট্রার হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন এবং তিনি বলেন এখানে যারা এসেছে তদের বস আমার বন্ধু। তিনি মুলত এখানে এসেছেন প্রভাব বিস্তার করতে, আর সেটা তিনি করেছেনও। এমন পরিস্থিতিতে এই তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে আমরা শংকিত, ধারনা করছি আমরা ন্যায্য অধিকারটুকু পাবো না। 

এমন ঘটনার বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার মো: রাজ্জাক হোসাইন বলেন, আমরা আমাদের মতো করে তথ্য সংগ্রহ করেছি। জমিদাতাদের পক্ষ থেকে আগামী বৃহস্পতিবার আবারও সময় চেয়েছেন, বিদ্যালয়ের জমি বুজিয়ে দেয়ার জন্য। আর ওই ভদ্রলোক (শফিকুল ইসলাম) এসে পরিচয় দিয়েছেন তিনি পবিপ্রবির উপ -রেজিস্ট্রার এবং সোহাগ আকনের ভগ্নিপতি। এখানে আমাদের প্রভাবিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, আমরা তদন্তের স্বার্থে তথ্য সংগ্রহ করেছি৷ এখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্যার স্বীদ্ধান্ত নিবেন।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি ছুটি ছাড়া সেখানে যেতে পারবেন না। তিনি কোথাও গেলে অবশ্যই তাকে ছুটি নিয়ে যেতে হবে, এটা হচ্ছে সরকারি নিয়ম। এর ব্যত্যয় ঘটলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply