নিজস্ব সংবাদ দাতা পটিয়া:-
চট্রগ্রামের পটিয়ায় তুচ্ছ বিষয়ের জের ধরে এক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার জানাজা থেকে আবুল কালাম নামে এক প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা ও (অবঃ)বৈমানিককে লাঞ্চিত করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নের নন্দেরখীল গ্রামে। এ নিয়ে লাঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম প্রতিকার চেয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের কাছে আবেদন জানালে তিনি বিষয়টি দেখার জন্য গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২৪ ইং পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,র কাছে প্রেরণ করেন বলে জানা গেছে।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলা উদ্দিন ভূঞা জনী বিষয়টি স্থানীয় ভাবে মিমাংসার জন্য ধলঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক আহমদ সহ কয়েকজন গন্যমান্য ব্যাক্তিকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে সূত্রে প্রকাশ। জানা যায়, পটিয়া উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের নন্দেরখীল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালামের ৩য় পুত্র সাবেক সামরিক বাহিনীর সদস্য মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম বিগত ২০২১ সালে ফরিদ আহমদ গং ও কামাল উদ্দিন গং থেকে তার নিজ বসত বাড়ি সংলগ্ন নন্দেরখীল মৌজার বিএস ১৩৩ নং খতিয়ানের ৫২০ দাগের ০.৩৩০০ একর পুকুর শ্রেণিভূক্ত জমি খরিদ করেন। আবুল কালাম অভিযোগ করেন, তাদের খরিদা ও দখলীয় জায়গায় জোরপূর্বক ভূমি দাবি করে নন্দেরখীল গ্রামের শাহ আলম, এরশাদ হোসেন, শহীদুল ইসলাম , নজরুল ইসলাম কাজল, ও মফিজ উদ্দিন পুকুরের জলীয় অংশে মাটি ভরাট করার চেষ্টা করে। তাদের এ ভরাট কাজে বাধা দিলে তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম কে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকার দেখিয়ে ব্যানার ও পোষ্টার সাটিয়ে তার মানহানি করার অপচেষ্টা চালায়।
এছাড়া ও তারা তার ছেলেদের নামে বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর খারাপ মন্তব্য করে বাঁশের খুঁটি স্থাপন করে ব্যানার সাটিয়ে তাদেরকে ও সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে যাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করে । এছাড়া ও প্রতিপক্ষরা তিনি সহ তার সন্তানদের বিভিন্ন ভাবে প্রাননাশের হুমকি সহ এলাকায়
হাটা চলা ও মসজিদ মাদরাসায় বাধার সৃষ্টি করে যাওয়ায় তিনি ও তার পরিবার
চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং
সকাল ১০ টায় প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে এলাকার এক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার জানাজা থেকে তাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন ও লাঞ্চিত করে বের করে দেয় প্রতিপক্ষরা। এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন জানালে জেলা প্রশাসক তা পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে পটিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোঃ মহি উদ্দিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আবুল কালাম একজন গেজেটভূক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের প্রতি স্বাক্ষরিত ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানীর
সনদপ্রাপ্ত, মন্ত্রনালয়ের গেজেট ভূক্ত ও স্মার্ট কার্ডধারী প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্বা । তার গ্রুপ কমান্ডার ছিলেন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আবু ছালেহ. তাকে শারীরিক ও মানষিক ভাবে লাঞ্চিত করার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখ জনক। তিনি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রতিপক্ষদের পক্ষে মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিন বলেন, আনীত অভিযোগ সত্য নয়, এ ধরনের কোন ঘটনা উক্তদিন ধলঘাটে ঘটেনি। তবে এ সংক্রান্তে আবুল কালামের আবেদনের প্রেক্ষিতে পটিয়ার ইউএনও মহোদয়ের কাছে মাননীয় জেলা প্রশাসক প্রেরিত বিষয়টি সহ এলাকাবাসীর সাথে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ও তার ছেলেদের চলমান বিরোধ মিমাংসার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক ধলঘাট ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের ও ফরিদ আহমদ চৌধুরী সহ কয়েক জন গন্যমান্য ব্যাক্তিকে দায়িত্ব প্রদান করেন । তারা উভয় পক্ষকে নিয়ে একাধিক বৈঠকে বসে ও কোন সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারেনি। তারা তা পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।আগামী ৩০ অক্টোবর ২৪ ইং এ ব্যাপারে ইউএনও, র দপ্তরে বৈঠকের দিন থাকলে ও এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে ।
এদিকে বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ও সমাজ সেবক গত ইউপি নির্বাচনে দক্ষিণ ভুর্ষি ইউনিয়ন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রাথী ছিলেন পটিয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ফরিদ আহমদ চৌধুরী। তার বিরুদ্ধে মফিজ উদ্দীন ও শহিদুর রহমান সাজ্জাদ বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা বানোয়াট মনগড়া অভিযোগ দিয়ে হয়রানি সহ মানহানির অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে ফরিদ আহমদ চৌধুরী জানান।এছাড়াও ফরিদ আহমদ চৌধুরীর ভাইপো মাঈমুল হাসান চৌধুরী একজন প্রবাসী ও রেমিট্যান্স যোদ্ধা। ফরিদ আহমদ চৌধুরী মোটর সাইকেল নিয়ে তার ভাইপো মাঈনুল হাসান চৌধুরী সহ এলাকায় শোডাউন দেওয়া হুমকি ধামকি ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিষয়টি সঠিক নয়, যাহা সম্পুর্ন মিথ্যা, ভিত্তিহীন কাল্পনিক কু- উদ্দেশ্য প্রনোদিত। এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ফরিদ আহমদ চৌধুরী জানান, মফিজ উদ্দীন ও শহিদুর রহমান সাজ্জাদ, আমি ও আমার ভাইপো মাঈনুল হাসান চৌধুরী এবং খালাতো ভাই ভুমি কর্মকর্তা দিদারুল আলম এর বিরুদ্ধে নানান ধরনের ষড়যন্ত্র ও অ-প্রচার চালাচ্ছে। এ ধরনের মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান। অন্যতাই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।