মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি
যশোরের অভয়নগরে পবিত্র রমজান শুরু হওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন ফলমুল ও মাছ-মাংসের বাজারে আগুন, ক্রেতারা দিশেহারা। উপজেলার নওয়াপাড়া বড় বাজারসহ ছোট ছোট বাজারে বিভিন্ন ইফতার জাতীয় ফলমূলের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত দু’দিন আগে আংগুর বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকা কেজি, সেই আংগুর এখন বিক্রি করছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি, এমন ভাবে আপেল, বেদানা, কমলা লেবুসহ প্রতিটি ফলের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি প্রতি দাম বাড়িয়ে দেওয়াতে ক্রেতা সাধারণের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণের কঠোর বার্তা দেয়াতে অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কিছুটা আতংকিত হওয়ায় আলু, পেঁয়াজ, রসুনসহ নিত্যপণ্যের বাজার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসছে বলে একাধিক সাধারণ জনগণ স্বীকার করেছে। কিন্তু রমজানে সাধারণ মানুষের রোজা রাখার পর ইফতার খোলার জন্য বিভিন্ন ফলমূল দরকার হয়। যে কারণে ক্রেতা সাধারণের এই রমজানে বিভিন্ন ফলমূলের চাহিদা অনেক বেশি হয়। যে জন্য বিনা কারণে উপজেলার ফল ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরি করে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো বিভিন্ন ফলের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষদের ফেলেছে বেকায়দায়।
উপজেলার ফল কিনতে আসা খোকন নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, গত ১০ মার্চ রবিবার আংগুর কিনেছি এক কেজি ২৩০ টাকা দিয়ে আজ প্রথম রমজানে ওই একই দোকানে আংগুর ফল কিনতে গেলে দাম বলে ২৯০ টাকা, এরকম হলে আমরা খাবো কি? আর বাঁচব কেমনে? অন্যদিকে মাছের দাম রমজান শুরুর সাথে সাথে দ্বিগুন বাড়িয়ে দিয়েছে মাছ ব্যবসায়ীরা। যে রুই মাছ গত দু’দিন আগে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি করেছে তা এখন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি, এক কথায় অসহায় সাধারণ মানুষের রমজানে মাছ কিনে খাওয়া দায় হয়ে পড়েছে। নওয়াপাড়া বড় বাজারে বাজার করতে আসা রবিউল ইসলাম জানান, হঠাৎ মাছের দাম এতোটা বেড়ে যাওয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি।
কি করে রোজা রাখবো, কেমনে মাছ-মাংস কিনে খাবো বুঝতেছিনা। অন্যদিকে, ঘোষণা অনুযায়ী গরুর মাংস ৬০০ টাকা বিক্রি করার নির্দেশ থাকলেও মাংস বিক্রেতারা ওই সব ঘোষণাকে থোড়াই কেয়ার করছে না। উপজেলার অধিকাংশ মাংস বিক্রেতারা ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা গরুর মাংস বিক্রি করছে। নওয়াপাড়া বাজারে বাজার করতে আসা একাধিক মানুষ জানান, উপজেলা প্রসাশনসহ ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ থেকে দীর্ঘদিন বাজার মনিটরিং না করার কারণে অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন মালামাল বিক্রেতারা নিজেদের খামখেয়ালি ভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের সাথে করছে অভিনব প্রতারণাসহ মানুষদের ফেলছে বেকায়দায়।
কেউ কিছু বলতে গেলেই বিক্রেতারা তেড়ে আসে ক্রেতাদের মারপিট করতে। এক কথায় অভয়নগর উপজেলার বাজার গুলোতে ফলমূলসহ নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে চলছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। জরুরি ভাবে চলতি রমজানে মানুষের চাহিদার দিকে লক্ষ রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আসু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল। এবিষয়ে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম আবু নওশাদ বলেন, আমাদের নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয়, নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যহত আছে, কেউ যদি সিন্ডিকেট করে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।