
মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের মো. আরিফ শেখের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার (২৫) সন্তান প্রসব করতে গিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
রাবেয়ার মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়েছে তার ছোট দুই সন্তান। মাত্র ৮ বছরের আরিফা মায়ের জন্য কান্নাকাটি করতে করতে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। চোখের পানি শুকিয়ে কালো দাগ পড়েছে তার চোখের নিচে। অপরদিকে, ৩ বছরের ছোট্ট আলিফ বাড়ির চারপাশে ঘুরে মাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। শিশু দুটির এই মর্মস্পর্শী দৃশ্য দেখে প্রতিবেশীরা কষ্ট পেলেও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কোনো অনুশোচনা দেখা যায়নি।
স্ত্রীকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন স্বামী মো. আরিফ শেখ। তিনি নিজেও অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন। রাবেয়ার দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বজনরা।
স্বজনদের অভিযোগ, সুস্থ রাবেয়াকে টঙ্গীবাড়ী ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। হাসি-খুশি অবস্থায় অপারেশন থিয়েটারে গেলেও অজ্ঞাত কারণে দেওয়া এক ইনজেকশনের পরপরই তার গর্ভস্থ সন্তান মারা যায়। দুই দিন পর মারা যান রাবেয়াও।
তারা আরও জানান, “আমরা শুধু রাবেয়া ও তার গর্ভের সন্তানকে হারালাম না, চিকিৎসার জন্য ধার-দেনা করে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ করে এখন নিঃস্ব হয়ে গেছি।”
উল্লেখ্য গর্ভবতী রাবিয়াকে সম্প্রতি নিয়মিত চেকআপ করাতে টঙ্গীবাড়ী থানা সংলগ্ন হায়াত মার্কেটের টঙ্গীবাড়ী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জেসমিন জাহান অপারেশনের পরামর্শ দেন এবং দুপুর আড়াইটায় অস্ত্রোপচারের সময় নির্ধারণ করেন।নির্ধারিত সময়ে রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হলে তাকে একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপর রাবেয়ার শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে যায়। পরিবারের দাবি, ইনজেকশন দেওয়ার পরপরই তার চোখ ঘোলা হয়ে যায় এবং তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়লে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে ভর্তি অবস্থায় প্রথমে রাবিয়ার গর্ভের সন্তান পরে রাবিয়ার মৃত্যু হয়।