রাজাপুরের মিরের হাটে পাঁচ শতাধিক দোকানদার থাকলেও নেই কোন গণশৌচাগার “ভোগান্তিতে হাজার হাজার ক্রেতা-বিক্রেতাসহ মুসুল্লিরা”

আলমগীর শরীফ, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:-

শুনেছি আদিম যুগে বিনিময় প্রথা লাগবের লক্ষে সেই যুগের মানুষরা কোন একসময় এলাকাভিত্তিক একটি স্থান নির্ধারণ করে সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল বিনিময়ে ও কড়ির মাধ্যমে কেনাবেচা করতো। এক সময় কালের পরিবর্তনে এই সমস্ত স্থানগুলোর নামকরণ করা হয় হাট-বাজার।


এর-ই একটি পুরাতন বাজার ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান পুটিয়াখালীর মিরের হাট বাজার। এই বাজারারে রূপালী ব্যাংক, ব্র্যাক অফিস, পল্লীবিদ্যুৎ সাব অফিস ও আরো বিভিন্ন ধরনের বেসরকারী অফিস সহ প্রায় ৫ শতাধিক পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতার স্থায়ী দোকান ঘর রয়েছে। প্রতি শুক্র ও সোমবার এই বাজারের নির্ধারিত হাটের দিনে হাজার হাজার নারী-পুরুষ বিক্রেতা ও ক্রেতার আগমন ঘটে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় এক দেড়শ আস্থায়ী দোকানদারও আসে এই হাটে। উক্ত হাটে গরু-ছাগলও কেনাবেচা করা হয়। এক কথায় অত্র অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষের চাহিদা মিটানোর মতো একটি উল্লেখ যোগ্য বাজার এটি।


বাজারে একইসাথে হাজার মুসুল্লি নামাজ আদায় করার মতো দুইটি জামে মসজিদ রয়েছে, যাতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তবলিগ জামাতের মুসুল্লিদের আগমন হয়।
এই বাজারের বার্ষিক ডাক হয় ৭/৮ লক্ষ টাকা।
তবে অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় এই বাজারে কোন সরকারী বা বেসরকারী ভাবে আজও পর্যন্ত কোন গনশৌচাগার (পাবলিক টয়লেট) তৈরী করা হয় নাই।


এ বিষয়ে অই বাজারের জামে মসজিদের ইমাম মাওঃ আব্দুল মোতালিব প্রতিবেদককে জানান যে, এই বাজারে বা মসজিদে কোন টয়লেট না থাকায় মসজিদের মুসুল্লি ও বাজারগামী বিপদগ্রস্ত মানুষরা বাজারের পরিবেশ দুষুন করে থাকেন। এছাড়াও বাজার সংলগ্ন খালের পানি চরম ভাবে দুষিত হয়, এই বাজারে বা মসজিদে গনশৌচাগার একান্ত প্রয়োজন। অত্র বাজারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট সমাজকর্মী সৈয়দ আল আমিন প্রতিবেদককে বলেন আমি সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন সময়ে বাজার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বারবার চেষ্টা করেও একটি গণশৌচাগার নির্মানে ব্যার্থ হয়েছি, তবে এই বাজারে একটি পাবলিক টয়লেট নির্মান করা অতিব জরুরী।


বাজারের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হেমায়েত উদ্দিন বলেন যে, এই বাজারের প্রতিষ্ঠাতা আমাদের বংশের পূর্বপুরুষেরা, কিন্তু দুঃখের বিষয় দীর্ঘকাল হইতে বর্তমান পর্যন্ত একটি পাবলিক টয়লেট স্থাপন করতে সক্ষম হইনি আমরা, তবে বর্তমানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করে আসছি, জানিনা কবেনাগাদ বাস্তবায়িত হবে।
বাজারের বর্তমান সভাপতি ও অত্র ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, আমি পদাধিকার বলে এই বাজারের সভাপতি হওয়ার পর থেকেই বাজারগামী ক্রেতা-বিক্রেতা ও স্থায়ী দোকানদারদের দুর্দশার কথা চিন্তা করে বাজার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গনশৌচাগার নির্মানের চেষ্টা চালিয়ে আসছি, তবে বর্তমান পর্যন্ত কোন অগ্রগতি নেই।


এবিষয়ে বাজারের পান-সুপারি বিক্রেতা রবি দেবনাথ, মাছ ব্যবসায়ী শাহজাহান, হোটেল ব্যবসায়ী সৈয়দ আলমগীর, চা দোকানদার সমরাট, বাজারের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মোসলেম উদ্দিন, ফারুক ও সহিদুল ইসলাম সহ একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান যে, এই বাজারের চেয়ে অনেক ছোট ছোট বাজারেও সরকারী টয়লেট আছে কিন্ত আমাদের এতবড় বাজারে টয়লেট নেই! এমনকি বাজার মসজিদেও কোন টয়লেট নেই। এতে বাজারগামী মহিলা ক্রেতাদের ভোগান্তি বেশী। এই বাজারে একটি গনশৌচাগার দ্রুত নির্মাণ করা একান্তই প্রয়োজন।

Leave a Reply