মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি
যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের আমতলা ও সোনাতলা গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে কাঠ পুঁড়িয়ে কয়লা তৈরির অবৈধ চুল্লিতে প্রতিদিন হাজার হাজার মণ কয়লা তৈরি করা হয়। ফলে ওই এলাকার বনও পরিবেশ হুমকির মুখে রয়েছে, বাড়ছে মানুষের শ্বাস কষ্টসহ নানাবিধ রোগ। ওই অবৈধ চুল্লি তৈরি সিন্ডিকেটের এতোটাই ক্ষমতা যে আইনকে থোড়াই কেয়ার করেনা। ওই সব অবৈধ চুল্লি প্রসাশনের পক্ষ থেকে বার বার ধ্বংস করে দিলেও এক অজানা ক্ষমতাবলে বার বার ওই চুল্লি তৈরি করে কাঠ পুঁড়িয়ে তৈরি করা হয় কয়লা, এতে পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে, উজাড় হচ্ছে বন।
গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ উপজেলা প্রসাশন ও পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের উদ্যোগে ১২ জন আওয়ামী লীগ নেতাদের গড়ে তোলা অবৈধ ১১৩ টি চুল্লি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ধ্বংস করা হয়। কিন্তু মাস পার হতে না হতে আবারও ওই অবৈধ চুল্লি তৈরি করে চালু করা হয়েছে কাঠ পুঁড়ানো কারবার। সাধারণ মানুষের ও এলাকাবাসীর প্রশ্ন এদের ক্ষমতার উৎস কি? এবং কর্তৃপক্ষ নিরব কেনো। কাদের ইন্ধনে ওই সব অপরাধীরা পার পেয়ে যায় ও বার বার গড়ে তুলছে অবৈধ চুল্লি। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও অসাধু সাংবাদিকসহ প্রসাশনের কিছু অসাধু ব্যক্তিদের ইন্ধনে ওই সব কাঠ পুঁড়িয়ে কয়লা তৈরির অবৈধ চুল্লি গড়ে তুলে করে চলেছে অবৈধ কারবার। ফলে সাধারণ মানুষের কান্না শেষ হচ্ছেনা।
ওই এলাকার সাধারণ মানুষ অবৈধ চুল্লি বন্ধের জন্য মানববন্ধনসহ বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেও তাদের ভাগ্যের ফলাফল শুন্য। সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন জরুরি ভাবে প্রসাশনের পক্ষ থেকে অবৈধ চুল্লি ধ্বংসসহ ওই সব অবৈধ চুল্লি তৈরি কারীসহ ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে আর যাতে অবৈধ চুল্লি তৈরি করতে না পারে। না হলে ওই এলাকার মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়ছে। তথ্য সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের জিয়া মোল্যা, ছোট্ট মোল্যা, শহিদ মোল্যা, হারুন মোল্যা, রফিক মোল্যা, তৌকির মোল্যা, কবীর শেখ, হাবিব হাওলাদার, তসলিম মিয়া, মনির শেখ কামরুল ফারাজী এবং ধূলগ্রামের হরমুজ সর্দার, রকশেদ সর্দার, ফারুক হাওলাদার এ অঞ্চলে শতাধিক চুল্লি তৈরি করে কয়লা বানিয়ে আসছেন। কিন্তু তারা এতটাই বেপরোয়া যে স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তো দূরের কথা মুখ খুলতেও সাহস করেনা। এ বিষয়ে কয়েকজন চুল্লি মালিকের সাথে কথা বললে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে আমাদের ব্যবসা চালাতে হয়। স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে সব মহলকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই তারপর ব্যবসা চালাই।
এবিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ এমদাদুল হক জানান, অবৈধ চুল্লি তৈরি ও পরিবেশ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তীর মুঠোফোনে একাধিক বার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।