৫ আগস্ট: ছাত্র-জনতার বিজয়ে পতন ঘটে স্বৈরশাসনের — দেশ ছাড়লেন সরকারপ্রধান


জুলফিকার আলী জুয়েল:

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন হয়ে থাকল ৫ আগস্ট ২০২৪। দীর্ঘদিনের শোষণ, দমন-পীড়ন, গুম ও গুলি সহ্য করার পর ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে আসে এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলে একটি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। জনতার ঐক্য ও উত্তাল আন্দোলনের মুখে দেশ ছাড়েন দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন সরকারপ্রধান।

সকালে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষ রাজধানীর শাহবাগ, টিএসসি, প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হয়। তারা সরকারের পদত্যাগ, গুম-হত্যার বিচার, শিক্ষাঙ্গনে নিপীড়ন বন্ধ এবং একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের দাবি তোলে।

আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে প্রথমেই ছোঁড়ে কাঁদানে গ্যাস, পরে চালানো হয় রাবার বুলেট ও সরাসরি গুলি। এতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় নিহত হন অন্তত ২৩ জন শিক্ষার্থী, শতাধিক আহত হন। রাতে নিখোঁজ হয় আরও অনেকে, যাদের অনেকের সন্ধান এখনো মেলেনি।

আন্দোলন দমাতে না পেরে বিকেল চারটার দিকে বিশেষ নিরাপত্তায় হেলিকপ্টারযোগে তেজগাঁও বিমানবন্দর পৌঁছান সরকারপ্রধান। সেখান থেকে সন্ধ্যার একটি বিশেষ বিমানে তিনি দেশত্যাগ করেন বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রাতেই খবর প্রচার করে—বাংলাদেশের সরকারপ্রধান রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে ভারত সরকারের শরণাপন্ন হয়েছেন।

সারাদেশে আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসনের অনেক অংশ নিরব ভূমিকা পালন করে। কিছু জায়গায় পুলিশের পক্ষ থেকেও সহনশীল আচরণ দেখা গেছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সাধারণ মানুষ মিলেই আন্দোলন পরিচালনা করতে দেখা গেছে কোথাও কোথাও।

সাবেক এক অধ্যাপক বলেন, “৭১-এর পর এত বৃহৎ জনতার জাগরণ আর দেখিনি। এবার আর কেউ থামাতে পারবে না।”

বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী জানান, “এটা কেবল সরকারের পতন নয়, এটা ইতিহাসের সংশোধন। দীর্ঘ একযুগ ধরে চলা অন্যায়ের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষ আজ জেগে উঠেছে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, ৫ আগস্ট ২০২৪ হচ্ছে সেই দিন, যেদিন নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা অস্ত্রের ভয়কে জয় করে প্রমাণ করে দিয়েছে—গণতন্ত্র কেবল কাগজে নয়, মানুষের হৃদয়ে বসবাস করে। জুলফিকার আলী জুয়েল চ্যানেল ২১ গাজীপুর।

Leave a Reply