স্টাফ রিপোর্টারঃ
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে এক কলেজ ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। এঘটনায় থানায় মামলা রুজু হওয়ার পর ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। এ সময় ধর্ষণ কাজে ব্যাবহৃত একটি সিএনজি গাড়ি ও ভিকটিমের একটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সিএনজিচালক শাহ্ আলম (২৮), তানভীর আহম্মেদ (২১) ও কামাল মিয়া (২২)। শাহ্ আলম কুলিয়ারচর উপজেলার আগরপুর গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে, কামাল মিয়া পার্শ্ববর্তী ভৈরব উপজেলার আকবরনগর মিরারপাড় গ্রামের জহির মিয়ার ছেলে ও তানভীর আহম্মেদ আকবরনগর গ্রামের মজলু মিয়ার ছেলে।
কামাল মিয়াকে গত শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে কুলিয়ারচর পৌরসভার বরখারচর বাজার থেকে এবং শাহ্ আলমকে গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘দুর্জয় ভৈরব’ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তানভীর আহম্মেদকে একই দিনে তার নিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। শাহ্ আলমের নিকট থেকে ধর্ষণ কাজে ব্যবহৃত সিএনজি গাড়ি উদ্ধার করা হয়। মুঠোফোন পাওয়া যায় তানভীর আহম্মেদ এর নিকট থেকে। মুঠোফোনটি কোনো এক ব্যক্তির কাছ থেকে কিনেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তানভীর।ধর্ষণের শিকার মেয়েটি বরিশালের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি কিশোরগঞ্জ সদরে। বাড়িতে ফেরার জন্য গত বুধবার বেলা দুইটার সময় বরিশাল থেকে ঢাকার বাসে ওঠেন। ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান রাত ৯টায়। সোয়া ৯টায় সায়েদাবাদ থেকে ভৈরবের বাসে ওঠেন।
ভৈরব পৌঁছান রাত ১২টায়। ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার বাস না থাকায় মেয়েটি একটি সিএনজিতে গাড়িতে ওঠেন। সিএনজি গাড়িতে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী যাত্রী ছিলেন। কিছু দূর যাওয়ার পর চালক ফোন করে তাঁর এক সহযোগীকে গাড়িতে ওঠান।
একপর্যায়ে চলন্ত সিএনজি গাড়িতে ওই ছাত্রী ঘুমিয়ে পড়েন, অন্য যাত্রীরা নেমে পড়েছেন বুঝতে পারেননি। ঘুম থেকে জেগে দেখেন ওই সিএনজি গাড়িতে কেবল চালক আর তাঁর সহযোগী। রাত পৌনে দুইটার দিকে চালক জানান, তাঁর বাড়ি সামনে, স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। স্ত্রীকেও কিশোরগঞ্জে নিয়ে যেতে হবে। কথা বলে কুলিয়ারচরের কলাকুপার চম্পাকান্দা এলাকায় অটোরিকশাটি থামিয়ে মেয়েটিকে একটি বাঁশঝাড়ের কাছে নিয়ে যান চালক ও তাঁর সহযোগী।
এরপর টানাটানি করে দুজন তাঁকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে তাঁর কাছ থেকে মুঠোফোন ও নগদ টাকা কেড়ে নেন। নিরুপায় হয়ে গভীর রাতে তিনি একা একা হেঁটে যাচ্ছিলেন। তখন একজনের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। পরে বৃহস্পতিবার কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা করেন ওই কলেজ ছাত্রী। মামলা নং- ০৫। মামলা রুজু হওয়ার পর ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান বলেন, মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষন করে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধর্ষন কাজে ব্যবহৃত একটি সিএনজি গাড়ী ও ভিকটিমের ছিনতাইকৃত একটি এ্যান্ডয়েড মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে কিশোরগঞ্জ জেলা বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। কামালকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।