সরক মহাসড়ক অটো রিক্সার দখলে
গাজী মামুন বিশেষ প্রতিনিধি:
কথা আর কাজের মিল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাওয়া যায় না একতিল,দেশের উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্তেও গাজীপুর মহানগরে অলিগলি ও মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত অটো রিক্সা। পুলিশ বলছে, তারা ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন মুখে এসব কথা বললেও কাজও করে তার উল্টো। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ ও একশ্রেণীর রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ করে চলছে এই অবৈধ যান। নিষিদ্ধ এসব ব্যাটারিচালিত রিক্সার কারণে প্রতিদিনই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।
অপরদিকে, ব্যাটারি চালিত রিক্সার কারণে বিদ্যুতের অবৈধ ব্যবহারও বাড়ছে। বৈদ্যুতিক মোটরচালিত এসব রিক্সায় ব্যাটারির চার্জ দিতে গিয়ে অবৈধ বিদ্যুতের সংযোগও বাড়ছে। যার ফলে ঘটে অগ্নিসংযোগের মতো দুর্ঘটনা। শুধু তাই নয় এসব ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা গুলো প্রত্যেকটি সংযোগ সড়কের মোড়ে মোড়ে রাস্তার দুপারেই দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী নেয়ার নাম করে যানজট সৃষ্টি করে, শুধু তাই নয় রাস্তার দুপারে অটো স্ট্যান্ড বানিয়ে যানজট সৃষ্টি করে আর চিপায় চাপায় ওতপেতে থাকে ছিনতাইকারীরা,
আর এসব পুলিশ যেন দেখেও দেখছে না, এ যেন জেগে থেকে ঘুমন্ত মানুষের প্রতিচ্ছবি, গাজীপুর অত্যন্ত ব্যস্ত নগরী,রাস্তার পাশ গুলো যেরকম ফুটপাত দখল করে রাখে তেমনিভাবে অটোরিকশা গুলো রাস্তার মোড়ে মোড়ে অটো স্ট্যান্ড করলে, তৈরি হয় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি,
যান্ত্রিক এসব রিক্সা চালাতে শারীরিক পরিশ্রম নেই বলে চালকদের আগ্রহ বেশি। শারীরিক শ্রম কম হয় বলে ব্যাটারি রিক্সাই এখন তাদের প্রথম পছন্দ।
তবে এসব রিক্সার সামনে ব্রেক থাকায়, তা হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ করতে গেলেই অনেক সময়ে উল্টে যায়। এসব অটো রিক্সায় অ্যাক্সিডেন্ট করে অনেককে হাত পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে মানবতার জীবন যাপন করছেন,এছাড়া মহিলাদের ওড়না চাকায় পেঁচিয়ে দুর্ঘটনা যেন নিত্যসঙ্গী। তাছাড়া সিএনজি, প্রাইভেটকারের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে সড়কে ব্যাটারি চালিত রিক্সা উল্টে গিয়ে আহত হয় চালকসহ যাত্রীরা। জিএমপির ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, মহাসড়কে ব্যাটারি রিক্সা চলতে দেয়া হয় না। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এসব বাহন অবৈধ হওয়ায় তা সড়কে পাওয়া গেলে জব্দ করে ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়। তবে পুলিশের বক্তব্য এমন হলেও বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। নগরীর অলিগলি ও শহরের অধিকাংশ সড়কেই ব্যাটারি রিক্সার চলাচল থামেনি। অভিযোগ আছে, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় লাইনম্যান দিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ব্যাটারি রিক্সা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
প্রতিদিন রিক্সা প্রতি টোকেন মানি নেয় তারা। নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক রুটেই চলাচল করে এসব রিক্সা। এক এলাকার রিক্সা অন্য এলাকায় নিয়মিত চলাচল করতে পারে না, তেমনি কেউ ভিন্ন রুটে গেলে রিক্সা আটকে চাঁদা দাবির মতো ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে নগরীতে। অপরদিকে ব্যাটারি রিক্সার গ্যারেজ থেকেও মাসোহারা তোলা হয়। এসব টাকা ভাগ হয়ে এলাকাভিত্তিক নেতাদের হাত ঘুরে যায় স্থানীয় উচ্চপদস্থ নেতাদের পকেটে । এছাড়া ব্যাটারি রিক্সা চলাচলের সঙ্গে নগরীর থানার পুলিশ সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ বেশ পুরনো। যদিও এ বিষয়ে জিএমপি শুরু থেকেই বলে আসছে তাদের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।