তালা (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা :
সাতক্ষীরা তালা এসি ল্যান্ড অফিসের উচ্চমান সহকারী স্বৈরাচারের দোসর মিলন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষদেরকে জমি নিয়ে মামলায় অযথা হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
সূত্রে জানা যায়, তালা উপজেলার ধামদিয়া ইউনিয়নের তৎকালীন পাকিস্তান আমলে প্রভাষ চক্রবর্তী ও তার তিন ভাইয়ের কাছ থেকে ১.৪১ একর সম্পত্তির মধ্যে ২৩/১০/১৯৬৭ সালে ৩৫৫৭ নং কেবলা দলিল মূলে ৬৭.৫ একর ও ১১/১০/১৯৬৯ তারিখে ৬২৯২ নং কেবলা দলিল মূলে ৩৪.২৫ একর সহ মোট ১.০৯২৫ একর জমি ক্রয় করেন মোস্তাফিজুর রহমান, গোবিন্দ বিশ্বাস, বিজয় বিশ্বাস গংরা। পরে আরও একটি কেবলা দলিলের মাধ্যমে বাকি সম্পত্তিও ক্রয় করে নেন। যা খুলনা সাব জজ আদালতের দেওয়ানী ৭৫৯/৬৭ মোকদ্দমার মূলে ডিগ্রীপ্রদত্ত।
সরেজমিনে তদন্তে জানা যায়, ক্রয়কৃত সম্পত্তির মালিকরা এতদিন যাবৎ শান্তিপূর্নভাবে জমির খাজনা ও ভোগ-দখল করে আসতেছেন। গত ১৮/০৪/২০২৪ তারিখে প্রভাষ চক্রবর্তীর ছেলে মিলন চক্রবর্তী ও তালা এসিল্যান্ড অফিসের উচ্চমান সহকারী লোভের বশবতী হয়ে কতিপয় স্বার্থান্বেষীদের ইন্ধনে তালা অ্যাসিলেন্ড অফিসে ২৯ জনকে বাদি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যার মামলা নং ৭০/২০২৩। যে সম্পত্তি তার বাবা প্রভাষ চক্রবর্তী ও তার ভাইয়েরা ১৯৬৭ ও ১৯৬৯ সালে বিক্রয় করিয়াছেন, তার দালিলিক প্রমাণাদিও ইতোমধ্যে উপজেলা ভূমি অফিসারের কাছে জমা হয়েছে। তার পরও সমস্যার সমাধান করছে না এই কুচক্রি মিলন। তালা ভূমি অফিসের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাসহ সকলকে তালুবন্দি করে রেখেছেন এই দূর্নীতিবাজ। জনশ্রুতি আছে যে, এই উচ্চমান সহকারী নিরীহ মানুষদের ফাঁদে ফেলে উৎকোচ গ্রহন করে অফিস শেষে কর্মকর্তাদের সাথে ভাগ-বাটোয়ারায় বসে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জবর দখলের বাণিজ্যে মিলন চক্রবর্তী বিগত ভূমি অফিসারের যোগসাজসে অনেক মানুষের ক্ষতি সাধন করেছেন। মামলার হয়রানিতে সাধারণ মানুষগুলো বিপাকে।
উল্লেখ্য, এই মিলনের বিরুদ্ধে আরো নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিভিন্ন সময় ভূয়া কাগজপত্র করে অনেকের জমি সুকৌশলে নিজের দখলে নিয়েছেন। আর এই অভিযোগের কোনো ধরনের দালিলিক প্রমাণাদি তিনি রাখেন না। সুচতুর মামলাবাজ মিলন প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হলেও বিবাদির কাছ থেকে সুকৌশলে নায়েবের মাধ্যমে কাগজপত্র নিয়ে ভূয়া কাগজ করার পায়তারা করছে। আর অভিযোগের নিষ্পত্তির নামে এসিল্যান্ডকে ম্যানেজ করে তারিখের পর তারিখ পরিবর্তন করে সময়ক্ষেপণ করছেন। তাকে ইন্ধন যোগাচ্ছেন ধানদিয়া গ্রামের কতিপয় আওয়ামী সুবিধাভোগী মানুষ। এর মধ্যে রয়েছে পার্থ চক্রবর্তী, নাড়– ঠাকুর, বাবু আরো অনেকে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী মিলনের নিকট জানতে চাইলে সে সাংবাদিকের উপর চড়াও হয়। এ সময় অন্যান্য সাংবাদিকরা এগিয়ে আসলে সে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
মামলার বিবাদীদের একজন মুকুল মিয়া জানান, আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে মিলন আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। ছাত্র জনতার আন্দোলনে আ’লীগ ক্ষমতা ছেড়ে পালালেও এখনো দৌরাত্ম শেষ হয়নি মিলনের। বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানি করে আসছে। আমরা এর একটা সুষ্ঠু সমাধান চাই।
সম্প্রতি তালা উপজেলার সরুলিয়া ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের বকুল মিয়ার কাছ থেকে নামজারীতে বকুল মিয়ার নাম ভুল হাওয়াই তাহা সংশোধনের নামে মোটা অংকের উৎকোচ দাবী করেন ভূমি অফিসের নাজির রুহুল আমিনের মাধ্যমে। এর তথ্য প্রমান ও বকুল মিয়ার স্বীকার উক্তি ভিডিও আকারে এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে। ইতিপূর্বে মিলন বাবুর দূর্নীতির চিত্র বহুবার পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও অদৃশ্যক্ষমতাবলে রক্ষা পেয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী ছত্রছায়ায় থাকা এ উচ্চমান সহকারী। ষঢ়যন্ত্রমূলক মামলার ভূক্তভোগী বিবাদিগন ন্যায়বিচারের স্বার্থে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
হয়রানিমুলক মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিট্রেট জনাব মো: আব্দুল্লাহ আল-আমিন কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়ে এই প্রতিবেদককে জানান, আমার আদালতে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কোন কিছু জানতে চাইবেন না এটা সাংবাদিকের কাজ না।