মণিরামপুর প্রতিনিধি:
টানা বৃষ্টির ফলে মণিরামপুরের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে সড়কপথে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাঁচাবাজার, দোকানপাট এবং বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। রাস্তা এবং নালা-নর্দমার বেহাল অবস্থার কারণে সমস্যার মাত্রা আরও বেড়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের দৈনন্দিন জীবন একরকম অচল হয়ে পড়েছে।
মণিরামপুর উপজেলা ব্যাপি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পৌরসভার সর্বত্র ও বাজারের পরিস্থিতিও দিন দিন খারাপ হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে পণ্য পরিবহন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতেও এর প্রভাব পড়েছে, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি উল্লেখ যোগ্যভাবে কমে গেছে। ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করতে পারছে না, তাদের ব্যবসা কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।
এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের কোনো স্থায়ী উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। প্রতিবছর বর্ষাকালে একই ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তারা সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
মনিরামপুর পাইকারি কাঁচাবাজারের আড়ৎ ব্যাবসায়ী আনসার কাজী জানান, আমাদের পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যাবস্থার বেহালদশার কারনে আজ বাজারের প্রতিটি ড্রেন বন্ধ হয়ে গেছে,এতে করে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বাজারে কৃষকেরা কাঁচামাল আনতে হিমশিম খাচ্ছে শুধু জলাবদ্ধতার কারণে। আমারও সঠিক সময়ে মালামাল বিভিন্ন বাজারে পাঠাতে পারছিনা এই জলাবদ্ধতার কারনে।এতে করে কাচামালে পচন ধরছে। ব্যাবসায় মন্দা সৃষ্টি হচ্ছে। লাভের বাবদে দিন গেলেই লোকশানের পরিমান বাড়ছে।
জলাবদ্ধতার পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, মণিরামপুর পৌরসভার ৫নং তাহেরপুর ওয়ার্ডের মন্ডলপাড়াসহ গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মণিরামপুর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি টইটুম্বুর এবং পরিস্থিতির কারণে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
অপরদিকে তাহেরপুর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো: সাইফুল ইসলাম ও মণিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এসএম তাজাম্মুল স্থানীয় সচেতনমহলদের সাথে নিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য রাস্তা খনন করে কালভার্টের ব্যবস্থা করছেন। গতকালও একই ভাবে মোহনপুর ওয়ার্ডে স্থানীয়দের এই কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়। মানুষ মানুষের জন্য এই কথাটির যৌক্তিকতা দেখা যায় সংকটময় পরিস্থিতিতে একে অপরের পাশে থাকাতে। এব্যাপারে সাংবাদিক সুমন চক্রবর্তী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, মানবজীবনে এই সংকটময় জলাবদ্ধতা পরিস্থিতিতে পৌরসভার দায়িত্বরতদের কোনরকম কার্যক্রম দেখা যায়নি, যেটা একেবারেই কাম্য নয়। যারা এইসময়ে মানুষের পাশে আছেন তাদের সাদুবাদও জানান তিনি।