আল-আমিন স্টাফ রিপোর্টার্সঃ
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অটোরিকশা চালক মোশারফ হোসেন ও হত্যাকারী আলমগীর একই গ্রামের প্রতিবেশি। তাই বাড়ি থেকে ওষুধ আর বেগুন আনতে বাজারে যাওয়ার পরও প্রতিবেশির আবদারে রাতের ভাড়া ধরেন মোশারফ। স্ত্রী যখন স্বামীর জন্য রাতের খাবার নিয়ে বাড়িতে অপেক্ষায় তখন কালাকুমা বাজারে জুসের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে মোশারফকে অচেতন করতে ব্যস্ত প্রতিবেশি হত্যাকারী যুবক আলমগীর। এরপর অটোরিকশাতেই অচেতন মোশারফের সঙ্গে থাকা গামছা গলায় পেচিয়ে একাই হত্যা করে নির্বিঘ্নে।
পরে ওই মরদেহ অটোরকিশাতে করেই চালিয়ে আসে আরও প্রায় ৫ কিলোমিটার। রাতের নির্জন রাস্তার ধারে ধানক্ষেতে ফেলে অটোরিকশা নিয়ে চলে যায় হত্যাকারী। রাতেই রিকশাটিও উধাও করে সেখানে থাকা ৪টি ব্যাটারি খোলে আপন খালু আরেক অটোরিকশা চালক নূর ইসলামের কাছে বিক্রি করে ৩২ হাজার টাকায়। কম দামে ব্যাটারি পেয়ে খালু নূর ইসলাম লুফে নেন সেগুলো। আর তাতেই তিনিও শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েন পুলিশের জালে। এভাবেই একটি হত্যাকান্ডের জট খোলে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে। উপজেলার কাকরকান্দি গ্রামের অটোচালক মোশারফ হোসেন গত ১২ মার্চ বুধবার সারাদিন ভাড়ায় চালিয়ে নিজের অটোরিকশা নিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন।
পরিবারের সবাইকে নিয়ে ইফতার ও নামাজের পর ওষুধ আর বেগুন কিনতে কাকরকান্দি বাজারে যান। কথা ছিল সেগুলো কিনে বাড়ি ফিরবেন তারাতারি। বাজারে যাওয়ার পর প্রতিবেশি যুবক আলমগীর তাকে ধরে কালাকুমা যেতে। কথামতো আলমগীরকে নিয়ে কালাকুমায় গেলে জুসের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় মোশারফকে। এরপর মোশারফ অচেতন হয়ে পড়লে অটোরিকশাতেই গলায় গামছা পেচিয়ে হত্যা করে আলমগীর। পরে ওই মরদেহ অটোরিকশায় করে ঘাকপাড়া মন্ডোলিয়াপাড়া পাকা রাস্তার পাশে নিয়ে ধানক্ষেতে ফেলে দেয়। অটোরিকশাটি পাশের উপজেলা ঝিনাইগাতি’র আমতলী বাজারে পাশে ফেলে রাখে।
তবে অটোরিকশায় থাকা ৪টি ব্যাটারি খোলে এনে তা ৩২ হাজার টাকায় বিক্রি করে কালাকুমা গ্রামের নূর ইসলামের কাছে। এভাবেই হত্যার কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেয় আলমগীর। রোববার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এমনটি জানান পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম। গত ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে ঘাকপাড়া মন্ডোলিয়াপাড়া পাকা সড়কের পাশে ধানক্ষেতে পাওয়া যায় অটোচালক মোশারফের মরদেহ। ওই মরদেহের পরিচয় সনাক্তের পর পুলিশ মাঠে নামে। শুক্রবার রাতে উদ্ধার করা হয় খোয়া যাওয়া অটোরিকশাটি। ওই রাতেই গ্রেফতার করা হয় হত্যাকারী আলমগীর ও ব্যাটারি ক্রেতা নূর ইসলামকে। রোববার তাদের আদালতের মাধ্যমে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।