
এস এইচ রতন,বাগেরহাট :-
বাগেরহাট জেলায় চারটি সংসদীয় আসন সিমিত করার প্রতিবাদে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকে দুদিনের আর্ধদিবস হরতাল প্রত্যাহার করে মঙ্গলবার সকার ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। জেলার ৪টি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, হরতাল, মহাসড়ক আবরোধ, নির্বাচন অফিসসহ জেলার সব সরকারি অফিস বন্ধ করে লাগাতর আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামীকালও সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত চলবে এই অবস্থান কর্মসূচি।
জেলা ও উপজেলার নির্বাচন অফিস অবরোধে কর্মসূচি চলাকালে কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার ¯^ার্থে ভোর থেকেই এসব সরকারি ভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জেলার সব নির্বাচর অফিগুলোতে নেয়া হয় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যাবস্থা। বাগেরহাট জেলা সদর ও ৯টি উপজেলায় এই কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে কোন অপ্রতিকর ঘটনা ঘটেনি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯ টা থেকে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপিসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ জেলার সব নির্বাচন অফিসের সামনে জড়ো হয়ে এই জেলা ও উপজেলার নির্বাচন অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এর পাশাপাশি তারা একই দাবিতে মহাসড়কে বি¶োভ মিলিছ করে। এরআগে সোমবার বাগেরহাট জেলাজুড়ে সকাল-সন্ধ্যা পূর্ণদিবস হরতাল পালনের পর আসন্ন দূর্গা পূজার কারনে মঙ্গল ও বুধবার দুই দিনের অর্ধদিবস হরতাল ও মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে দুইদিন জেলা ও উপজেলার নির্বাচন অফিস অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলার সব নির্বাচন অফিসে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। আগামীকাল বুধবারও একই ভাবে বাগেরহাট জেলার সব নির্বাচন অফিসে অবস্থান কর্মসূচি পালিন করার কথা রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন থেকে একটি আসন কমিয়ে ৩টি করার ঘোষণা দেয়ার পর ৩০ জুন থেকে রাজনৈতিক দলরের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নির্বাচন কমিশন দেশেল ৩০০ সংসদীয় আসনের গেজেট প্রকাশের পরপরই বিএনপি, জামায়তসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি গঠন করে বাগেরহাট জেলার ৪টি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, সকাল-সন্ধ্য হরতাল, মহাসড়ক আবরোধ, নির্বাচন অফিসসহ জেলার সব সরকারি অফিস বন্ধ করে লাগাতর আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবারের মতো বুধবারও একই ভাবে বাগেরহাট জেলার সব নির্বাচন অফিসে অবস্থান কর্মসূচি পালিন করার কথা রয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বাগেরহাট সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহবায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের একটি সংসদীয় আসন কমিয়ে জনগণের আশা-আকাক্স¶াকে উপে¶া করেছে। বাগেরহাট একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। ভৌগোলিক অবস্থা, জনসংখ্যা, মোংলা বন্দর, ইপিজেড- শিল্পাঞ্চল ও দুটি ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইডসহ ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় চারটি আসন বহাল রাখা প্রয়োজন। একটি আসন কমে গেলে রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য অবকাঠামো উন্নয়ন, চাকরি ও বিভিন্ন সরকারি সেবায় বাগেরহাটবাসী বঞ্চিত হবে, তাই আমরা দাবী আদায়ে সবাইকে নিয়ে আন্দোলনে নেমেছি।
জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, বাগেরহাটবাসীর স্বার্থ রক্ষায় কোনো দলীয় আন্দোলন নয়, এটি জন স্বার্থের আন্দলোন নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে আসন পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল রাখতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।