স্টাফ রিপোর্টার
ময়মনসিংহ রেলওয়ে ষ্টেশনে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে রেল যাত্রী নিহত মূল আসামি মোহাম্মদ আলী (২৬) চাকুসহ গ্রেফতার গত ২১/০২/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যা ১৮.৪৫ ঘটিকার সময় মহুয়া কমিউটারের যাত্রী গোপাল পাল(৪৬), পিতা ললিত চন্দ্র পাল, মাতা-বরদা রানী পাল, সাং-গাগলজুর চৌরাপাড়া, থানা-মোহনগঞ্জ, জেলা-নেত্রকোনা স্ব-পরিবারে ঢাকা যাওয়ার জন্য ময়মনসিংহ রেল ষ্টেশনে অপেক্ষায় ছিলেন। ঘটনার সময় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য রেলওয়ে ষ্টেশন এর ৫ম প্লাটফর্মে গেলে ছিনতাইকারীর কবলে পরে। পরবর্তীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে পরিবারের লোকজনের কাছে আসলে পরিবার ও স্থানীয়দের সহায়তায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উক্ত ঘটনার বিষয়ে ডিসিষ্ট এর স্ত্রী জবা রানী বিশ্বাস(৪৬) বাদী হয়ে এজাহার দাখিল করিলে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার মামলা নং-৪, তারিখ-২২/০২/২০২৪, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড। উক্ত মামলার মুল রহস্য উদঘাটনসহ আসামী গ্রেফতারের নিমিত্তে পুলিশ সুপার ময়মনসিংহ জেলা পুলিশকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকৃত আসামীকে সনাক্ত সহ গ্রেফতারের জন্য নির্দেশ দিলে পরিদর্শক মোঃ সহিদুল ইসলাম পিপিএম নির্দেশ মোতাবেক অভিযান পরিচালনা করতে থাকেন। পুলিশ সুপার ময়মনসিংহের নির্দেশ মোতাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রায়হানুল ইসলাম (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নপিপ্রাপ্ত), ময়মনসিংহ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), ময়মনসিংহ এবং অফিসার ইনচার্জ কোতোয়ালী মডেল থানার সার্বিক তত্ত্বাবধানে উক্ত ঘটনার বিষয়ে বিবিধ তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন এবং তথ্য প্রযুক্তি ও সোর্সের মাধ্যমে ইং-২৩/০২/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ বিকাল অনুমান ১৫.০০ ঘটিকার সময় পুলিশ পরিদর্শক , মোঃ সহিদুল ইসলাম পিপিএম বিশ্বস্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, মামলার ঘটনার সহিত জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামী বর্তমানে কোতোয়ালী মডেল থানাধীন ৫নং কালিবাড়ি রোডস্থ জনৈক আমিনুল হক শামীম এর পরিত্যক্ত বাড়ীতে ঝোপঝাড়ের ভিতর নেশা করছে।
উক্ত সংবাদের প্রেক্ষিতে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সহিদুল ইসলাম পিপিএম সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আসামী মোহাম্মদ আলী(২৬), পিতা মোঃ বিল্লাল, সাং-কালিবাড়ী গুদারাঘাট, থানা-কোতোয়ালী, জেলা-ময়মনসিংহকে নেশা করা অবস্থায় গ্রেফতার করেন। আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে গত ২১/০২/২০২৪ খ্রিঃ সন্ধ্যা ১৮.৪৫ ঘটিকার সংঘটিত হত্যাকান্ডের ঘটনার কথা স্বীকার করে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত হোল্ডিং চাকু ৫ নং কালিবাড়ি রোডস্থ এক ব্যাক্তির পরিত্যক্ত বাড়ীর ভিতর ঝোঁপঝাড়ের ভিতর হইতে আসামীর দেখানো এবং সনাক্ত মতে উদ্ধার করেন। ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র, ডাকাতির প্রস্তুতি এবং চুরিসহ সর্বমোট ৫ টি মামলা রয়েছে। ধৃত আসামী আরোও জানায় গত ইং ২১/০২/২০২৪ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ১৮.৪৫ ঘটিকার সময় সূত্রীয় মামলার ডিজিষ্ট গোপাল পাল(৪৬), পিতা ললিত চন্দ্র পাল, মাতা-বরদা রানী পাল, সাং-গাগলজুর চৌরাপাড়া, থানা-মোহনগঞ্জ, জেলা-নেত্রকোনা ট্রেন ছাড়ার পূর্বে প্রশ্রাব করতে রেলস্টেশনের ৫নং রেললাইনে দন্ডওমান বগির দক্ষিন পাশে ৬নং রেললাইন সংলগ্ন ফাঁকা স্থানে গেলে উক্ত আসামী ডিজিষ্টকে ঝাপটে ধরে ডিজিষ্ট এর কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল নেওয়ার জন্য চেষ্টা করে।
একপর্যায়ে ডিজিষ্ট তাহার নিকট থাকা ১৫,০০০/-(পনের হাজার) টাকা দিলেও ডিজিষ্ট এর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। ডিজিষ্ট মোবাইল ফোন দিতে বাধা প্রদান করে। একপর্যায়ে আসামী উক্ত ডিজিষ্টকে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য ডিজিষ্ট এর বুকে আসামীর হাতে থাকা হোল্ডিং চাকু দ্বারা স্ব-জোরে পাড় মেরে আসামী দ্রুত পালায়ন করে। ডিজিষ্ট রক্তাক্ত গুরুতর অবস্থায় ০৩নং প্লাটফর্মে চলে আসে। তখন প্লাটফর্মে থাকা লোকজন, তার স্ত্রী ও রেলওয়ে পুলিশের সহায়তায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন।