জুয়েল শেখ জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে দু’ দিনের ব্যবধানে শিয়ালের কামড়ে ২০জন নারী পুরুষ আহত হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকার ৫ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের মাঝে শিয়াল আতংক বিরাজ করছে। স্কুলগামী ছাত্র ছাত্রীদের মাঝেও ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের রতনপুর, রায়পুর, চকশিমুলিয়া, দোঘড়া ও পলাশগড় গ্রামে শিয়াল আক্রমনের এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের অনেকেই জয়পুরহাট জেলা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে ভ্যাকসিন নিয়েছেন বলে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় শিশু কিশোর সহ সাধারণ মানুষ শিয়াল ভীতিতে দিন কাটাচ্ছে। দিনের বেলায় মাঠে কাজ করতে বের হলেও বাঁশের লাঠি হাতে বের হচ্ছেন । আবার সন্ধ্যার পর ভয়ে একা কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। শুধু তাই নয় এলাকায় শিয়ালের আক্রমন থেকে বাঁচাতে শিশু ও গবাদিপশু নিয়েও শংকিত রয়েছেন তারা।
রতনপুর হিন্দুপাড়া গ্রামের স্বপন চন্দ্রের স্ত্রী প্রভাতী রাণী বলেন, সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে বাড়ীর পাশে গরু ছাগলের খাবার যোগার করার পাশাপাশি গৃহস্থালীর কাজ করছিলাম। হঠাৎ এসময় একটা শিয়াল আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। ভয়ে চিৎকার দেয়ায় লোকজন এগিয়ে এলে শিয়ালটি পালিয়ে যায়।
চকশিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোক্তাদির বলেন, মঙ্গলবার (২৯) কয়েকজন মিলে ক্ষেতে কাজ করার সময় একটি শিয়াল আমার দিকে তেড়ে আসে। সবাই মিলে তাড়া দিলে সে চলে যায়। তবে ঐদিনই চকশিমুলিয়া গ্রামের (নদীরধার) মহসিনের ছেলে রতন, রতনপুর হিন্দুপাড়া গ্রামের অধির চন্দ্র (৬০), আকবর হোসেনের স্ত্রী রাজিয়া (৫০), জগাইয়ের পুত্র নেপাল (১৮) সহ ১০/১৫ জনকে শিয়াল কামড় দিয়ে আহত করেন।
রতনপুর গ্রামের শ্রী প্রসাদ চন্দ্র মন্ডল বলেন, শিয়ালের আক্রমণের ঘটনায় মানুষের মনে ভয় বিরাজ করছে। এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। হঠাৎ এমন ঘটনায় দিনে দুপুর মাঠে কাজকর্ম ও সন্ধার পর রাস্তায় লোকজন চলাচল করতে আতংক বোধ করছে।
উপজেলা ভেটেনারী সার্জন ফয়সাল রাব্বী বলেন, শিয়াল র্যাবিশ আক্রান্ত হলে বা তাকে কেউ উত্যক্ত করলে তারা আক্রমণামত্মক আচরণ করে। এ সময় তারা মানুষ, গরু, ছাগল ও কুকুর যাকেই সামনে পায় তাকেই আক্রমণ করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. সামছুজ্জোহা বলেন, শিয়ালের কামড়ে মানুষ ও পশু প্রাণীর জলাতঙ্ক রোগ হয়। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে। তবে যদি কাউকে শিয়াল আক্রমন করে তাহলে ক্ষতস্থান পরিস্কার করা সহ দ্রত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি জানান।
তবে জেলা সিভিল সার্জন ডঃ মুহাঃ রুহুল আমিন বলেন, এ ধরনের রুগীকে চিকিৎসা দেবার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন মজুদ আছে । এমন কেউ আসলে আমরা তাদের চিকিৎসা সেবা দিব। আর এসব শিয়য়ালের উপদ্রব থেকে বাঁচতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে জনগনের মাঝে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
স্হানীয় ধরন্জী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, কয়েক দিন আগে এমন ঘটনা ঘটেছে । তিনি জন সাধারণকে সাবধানে চলাচল করতে বলেন এবং এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সম্ভাব্য ব্যবস্হা নেয়া হবে।