নেত্রকোনা মুক্ত দিবস, বেগম রোকেয়া ও দূর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত

সৈয়দ সময় ,নেত্রকোনা :

৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা মুক্ত দিবস। জেলা প্রশাসন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে নানা কর্মসূচীতে উদযাপিত হয়েছে দিবসটি।

গতকাল সকালে জেলা কালেক্টরেট প্রাঙ্গনে মুক্ত দিবসের বেলুন উড়ানো হয় এবং ভাস্কর্য প্রজন্ম শপথ ও সাতপাই স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

দিবসটি উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন থেকে জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস,পুলিশ সুপার মীর্জা সায়েম মাহমুদ ও জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক ডাঃ আনোয়ারুল হক, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান,বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান তালুকদার,এডভোকেট মাহফুজুল হক এর নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, জেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষকদল,সেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে পাবলিক হলে মুক্ত দিবস, বেগম রোকেয়া দিবস ও দূর্নীতি বিরোধী দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাসের সভাপত্বিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মীর্জা সায়েম মাহমুদ ও জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক ডাঃ আনোয়ারুল হক, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান,বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান তালুকদার, হায়দার জাহান চৌধুরী, রহমত আলী, মির্জা আজিজুল হক, জামায়াত নেতা মাহাবুবুর রহমান, কামাল উদ্দীন, বিএনপিনেতা এস.এম মনিরুজ্জামান দুদু, তাজেজুল ইসলাম ফারাস সুজাত, নেত্রকোণা জেলা প্রেস ক্লাব সদস্য সচীব ম. কিবরিয়া চৌধুরী হেলিম, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টি নেতা সজিব সরকার রতন, গণপরিষদ নেতা খান মোহাম্মদ অপু, নাগরিক কমিটির নেতা ফাহিম রহমান খান পাঠান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলননেতা হাসনাত জনি।

মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের অর্ন্তভুক্ত নেত্রকোনা জেলার রয়েছে গৌরবময় ইতিহাস। রনাঙ্গনে এখানকার প্রায় তিন হাজার মানুষ সরাসরি যুদ্ধে অংশ গ্রহন করে। স্বাধীনতা অর্জনে প্রাণ দিতে হয় ৬০ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় এক হাজার সাধারন মানুষকে। হানাদাররা ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল নেত্রকোনায় প্রবেশ করে। দালালদের সাথে নিয়ে তারা মেতে উঠে নির্যাতন আর হত্যাযজ্ঞে। মানুষকে ধরে এনে নির্মম ভাবে গুলি করে হত্যা করে ফেলে দেয় নেত্রকোনার মোক্তারপাড়া ব্রিজ, নেত্রকোনা থানার পাশে নদীরপাড়,চন্দ্রনাথ স্কুলের নদীরপাড়,চল্লিশা রেল ব্রিজে এবং পূর্বধলার ত্রিমহোনিতে।

নেত্রকোনাকে মুক্ত করার লক্ষে মুক্তিযোদ্ধারা ৮ ডিসেম্বর তিনদিক থেকে পাকসেনাদের সাথে লাগাতার যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে। ৯ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা কৃষিফার্ম এলাকায় এ্যাম্বোস পেতে হানাদারদের উপর আক্রমন করে। এ সময় সরাসরি যুদ্ধে শহীদ হন আব্দুল জব্বার,আব্দুর রশিদ ও আব্দুর সাত্তার। এই যুদ্ধে বহু পাকসেনা নিহত হয় ও অনেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। হানাদার মুক্ত হয় নেত্রকোনা। দিবসটি উপলক্ষ্যে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

Leave a Reply