জলঢাকায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে, অফিসের সামনে ভুক্তভোগীরা

 

 

নবিজুল ইসলাম নবীন,
নীলফামারী প্রতিনিধি,

যোগদানের প্রায় চার মাস, অফিস করার কথা, কিন্তু অফিসে পাওয়া যাচ্ছে না উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কে, ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের। নাম না বলা শর্তে অনেকে জানান, ওনার চাকরি নেই বেশীদিন, কয়েকমাসের মধ্যে তিনি অবসরে যাবেন। এজন্য তিনি টাকা ছাড়া কোন কাজেই করতে চান না। ঠিকমত অফিস না করায় তাঁকে পাওয়া যায় না, আবার পাওয়া গেলেও টাকা ছাড়া কোন কাজেই হয় না। এসব অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবু তাহের মোঃ কামরুল হাসান এর বিরুদ্ধে।

এছাড়াও উপজেলার রাজারহাট কাবাদিয়া রহমানিয়া আলিম মাদ্রাসার অবৈধ নিয়োগের মামলা আদালতে চলমান রয়েছে, এমপিও না দেয়ার জন্য দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকা শর্তেও এমপিও ভুক্ত করতে অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নানকে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে।

ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান এর বিরুদ্ধে প্রতিষ্টানের সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতা গত ১০ আগস্ট নানান অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জি আর সারোয়ার উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করেন এবং ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন। কিন্তু তদন্ত শেষ হলে-ও প্রতিবেদন জমা দিতে পারছেন তদন্ত কর্মকর্তা। ৪ জনের স্বাক্ষর হলেও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে খুঁজে পাচ্ছে না। মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী শাকিব ইসলাম বলেন, আমাদের অভিযোগ দেয়ার প্রায় দুইমাস হচ্ছে কি কারণে আমরা প্রতিকার পাচ্ছিনা।

৭দিনে যেখানে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা, সেখানে ১ মাস অতিবাহিত হচ্ছে আমরা কোন ফল পাচ্ছি না। ভুক্তভোগী সোহেল রানা, কেবু মিয়া, মনিরুজ্জামান বাবুসহ অনেকে বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে প্রায় ১ মাস ধরে আসছি ওনাকে পাওয়া যায় না। সোমবার দুপুরে দেখা যায় অফিসের সামনে শপ বিছিয়ে বসে আছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী শিক্ষক। একই অভিযোগ তাদের।

গত জুন মাসের ১০ তারিখে শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদানের প্রায় চারমাসে অনেক অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষার হলে যাওয়ার আগেই তিনি মোটা অংকের টাকা বুঝিয়ে নেন। টাকা দিতে দেরি হওয়ায় নিয়োগ পরীক্ষা হয়নি কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্টানের, অপেক্ষায় থেকে চলে গেছেন ডিজির প্রতিনিধি। ওই শিক্ষা অফিসার আবু তাহের মোঃ কামরুল হাসান কে একাধিক বার ফোন দিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি।কিছুক্ষণ পর ফোন দিয়ে বলেন, আগামীকাল বিকেলে আপনাদের সাথে দেখা হবে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, আমারও ফোন রিসিভ করেন না তিনি। আপনারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলেন, উনি জেলা প্রশাসককে অবগত করুক, ডিসি মহোদয় বললেই তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


উপজেলা নির্বাহী অফিসার জি আর সারোয়ার বলেন, আমিও একজন সরকারি কর্মকর্তা, ৫ আগস্ট এর পর দেশে যা অবস্থা একজন কর্মকর্তা অফিসে না থাকলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়া উনি নিয়মিত অফিসে না আশায় আইন শৃঙ্খলা মিটিংগুলোতে উপস্থিত থাকতে পারেন না। তিনি বলেন, শিক্ষা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবো, তারপর ব্যবস্থা ।

Leave a Reply