উত্তরায় মিথ্যা মামলা দিয়ে দুই সাংবাদিককে কোর্টে প্রেরণের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধ

রাজধানীর উত্তরায় সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া দুই সাংবাদিককে মারধর ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে কোর্টে প্রেরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ (বুধবার) উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।


মারধর ও মামলার শিকার দুই সাংবাদিক হলেন দৈনিক আমার বার্তা পত্রিকার উত্তরা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান ও দৈনিক তৃতীয় মাত্রা পত্রিকার সিটি রিপোর্টার সাইফুল ইসলাম একা।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের স্বজনদের দাবি, গেল মঙ্গলবার আনুমানিক রাত সাড়ে দশটার দিকে কোনো এক আওয়ামী লীগ নেতার অবস্থান সন্দেহে উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টর এলাকার ৩/ডি নং রোডের ২৩/২৫নং বাড়িটিকে ঘেরাও করে স্থানীয় ছাত্র-জনতা।

এমন খবরের তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়ায় ওই বাড়ির মালিক গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জামিল হাসান দুর্জয় নিজ সাঙ্গপাঙ্গসহ তাদেরকে (দুই সাংবাদিককে) বাড়ির ভেতর ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। পরে তাদেরকে চোর সাব্যস্ত করে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়।


সবশেষ আজ (বুধবার) দুপুরে ওই আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রী সিনথিয়া সালমা হাবীব বাদী হয়ে ওই দুই সাংবাদিকসহ অপরাপর ১২/১৩জনকে আসামী করে উত্তরা পশ্চিম থানায় মারপিট ও চুরির মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিকসহ অপরাপর দুজনকে বিকেলেই কোর্টে প্রেরণ করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।


এ বিষয়ে মারধর ও মামলার শিকার ভুক্তভোগী সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম একার স্বজন মাহমুদুল হাসান প্রতিবেদককে জানান, আমার মামা একজন সাংবাদিক হিসেবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফেসবুকে একটি লাইভ ভিডিও করেন। সেই ভিডিওতে ওই বাড়ির মালিক আওয়ামী লীগ নেতা জামিল হাসান দুর্জয়ের একটি সাক্ষাৎকার শেষে তিনি বাড়ির নিচে রাস্তায় নেমে আসেন। ভিডিওতে এসময় বাড়ির ভেতর উত্তেজিত ছাত্র-জনতাকে তল্লাশি করতেও দেখা যায়।


তিনি বলেন, আমার মামা ওই আওয়ামী লীগ নেতার ভিডিও করায় ক্ষিপ্ত হয়ে মামাসহ অপর সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে কয়েকজন মিলে বাড়িটির ভেতর নিয়ে যায় এবং মারধর করে। পরে তাদের অবস্থা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যাওয়া দৈনিক মানবকন্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক রাসেল খান সেখানে গেলে তাকেও রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে মারধর করা হয়েছে। আমরা এই মিথ্যা মামলা থেকে সাংবাদিকদের অব্যাহতি চাই।


এদিকে, মারধর ও নির্যাতনের শিকার অপর সাংবাদিক রাসেল খান জানায়, উত্তরার দু’জন সাংবাদিককে হেনস্তা করা হচ্ছে খবর পেয়ে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে আমি ঘটনাস্থলে যাই। ওই বাড়ির সামনে ভিড় লক্ষ্য করে সেখানে গেলে কয়েকজন আমাকে বলতে থাকে ‘এই তুই কে? তুই ও-তো সাংবাদিক, ওদের নিতে আসছিস’ এই বলে আমার শার্টের কলার চেপে ধরে রাস্তা থেকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে আমাকে প্রচুর মারধর করে।

সেই সাথে আমার পকেটের মানিব্যাগে থাকা নগদ একচল্লিশ হাজার টাকা, সাংবাদিকতার আইডি কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।


অন্যদিকে, ওই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে বাদী সিনথিয়া সালমা হাবীব ফোন রিসিভ করেননি।


এদিকে সাংবাদিকদের উপর রাতভর নির্যাতন ও মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, কোন ধরনের থানায় নির্যাতন করা হয়নি।তদন্ত করে দেখবো নির্দোষী হলে তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা হতে অব্যহতি দেওয়া হবে।

Leave a Reply