দিনাজপুর হিলি প্রতিনিধি
মোঃওয়াজ কুরনী
আজ ১১ ডিসেম্বর হিলি হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি বাহিনী থেকে মুক্তি পায় হিলি, যা ছিল স্বাধীনতার যুদ্ধে এক গৌরবময় অধ্যায়। পাক হানাদার বাহিনীর নির্মম নির্যাতন, হত্যাযজ্ঞ এবং সম্ভ্রমহানি আজও স্মরণ করিয়ে দেয় সেদিনের ভয়াল স্মৃতি। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এই দিনটি এখনো কাঁদিয়ে তোলে হিলিবাসীদের।
১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর হিলি এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীর তীব্র লড়াইয়ের পর পাক সেনারা পরাস্ত হয় এবং হিলি পাক হানাদার মুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে এই স্থানটি। এই অঞ্চলের স্বাধীনতাকামী মানুষ চরম সাহসিকতার সাথে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। তখনকার পাক সেনারা হিলি সীমান্তে একটি শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তুলে ছিল। ছাতনী গ্রামে তাদের ঘাঁটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে তারা ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সজ্জিত হয়ে বিভিন্ন দিক থেকে আক্রমণ শুরু করে।
পাক বাহিনী এখানে ৬-৭ হাজার সেনা, ৪০টি ট্যাংক নিয়ে অবস্থান করছিল এবং তারা মুহাড়া পাড়া এলাকায় একটি গভীর খাল কেটে বাংকার নির্মাণ করেছিল। কিন্তু ভারত সরকার বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনী পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া ব্যাপক হামলার পর ১১ ডিসেম্বর বেলা ১টায় পাক সেনারা পরাস্ত হয় এবং হিলি মুক্ত হয়।
এদিন হিলি সীমান্তের মানুষের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে শহীদদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে “সন্মুখ সমর” স্মৃতিস্তম্ভ। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার লিয়াকত আলী ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিবছর দিনটি স্মরণে মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকার বাসিন্দারা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকেন।
হিলি হানাদার মুক্ত দিবস আজও স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় দিন হিসেবে এলাকার মানুষের হৃদয়ে অমলিন হয়ে রয়েছে।