হাসনাত রাব্বু
কুষ্টিয়ার মিরপুরে ৪টি অবৈধ ইট ভাটায় অভিযান চালিয়ে পৃথক ভাবে প্রতিটি ভাটায় দেড় লাখ টাকা করে মোট ৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এসময় ১টি ইট ভাটা গুড়িয়েও দেয়া
হয়েছে বলে অভিযান সূত্রে নিশ্চিত করেছেন। সোমবার দুপুরে মিরপুর উপজেলার
টিপিআর ব্রিকস, এম আর ব্রিকস, এবি ব্রিকস এবং একে বি ব্রিকস নামের
ভাটাগুলিতে এই অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় এএস এম ব্রিকস নামের ১টি অবৈধ
ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী
ম্যাজিষ্ট্রেট ও সিনিয়র সচিব মমতাজ বেগমের নেতৃত্বে পরিচালিত এই ভ্রাম্যমান
আদালতে জেলার আইন শৃংখলা বাহিনী ফায়ার সার্ভিস এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার
প্রধান কেমিষ্ট হাবিবুর রহমান বাশারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
অভিযান পরিচালনার সময় ইট ভাটা মালিক ও শ্রমিকদের বাঁধার মুখেও পড়তে হয় পরিবেশ
অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমান আদালতকে।
উল্লেখ্য কুষ্টিয়া জেলার ৬টি উপজেলায় বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত ভাবে ইট প্রস্তুত ও ভাটা
স্থাপন আইন লঙ্ঘন করে যত্রতত্র প্রায় ২শতাধিক অবেধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এতে
একদিকে জেলার তিন ফসলী উর্বরা কৃষি জমি ধ্বংস হচেছ অন্যদিকে দেদারসে গাছ
কেটে কাট পুড়িয়ে গোটা পরিবেশকে বসবাসের অযোগ্য করে তোলায় তার প্রতিকার
চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরে অসংখ্য লিখিত আবেদন জমা
পরে। বিষয়টি গুরুত্ব বিবেচনায় জেলার আইন শৃংখলা সভায় একাধিক বার আলোচিত
হয়। তারই প্রেক্ষিতে অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে এই অভিযান পরিচালিত হয় বলে পরিবেশ
অধিদপ্তর কুষ্টিয়া কার্যালয় সূত্রে জানায়।
অবৈধ ভাটা বন্ধের দাবি করে উচ্চ আদালতে রীটকারী দৌলতপুর উপজেলার হাবলু মোল্লা
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তর আজকে ইটভাটায় অভিযানের নামে যেটা
করেছে সেটা নিছক লোক দেখানো। ওইসব ভাটা মালিকদের সাথে চুক্তিমতে সবাই
মিলে দেড় কোটি টাকা দেয়ার কথা পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকদের। সেই টাকা আদায়ের
জন্যই আজকে ৪টি ভাটায় এই লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে অন্যদের সতর্ক দিলো
যে আগামী দুই একদিনের মধ্যে বাকীরা সবাই টাকা পরিশোধ না করলে আবার অভিযান
চালানো হবে। তাছাড়া যে বিধি ল্ধংসঢ়;ঘনের দায়ে ওই ৪টি ভাটাকে দেড় লাখ টাকা করে
জরিমানা ধরেছে এটা কোন পানিসমেন্টই না’।
সোমবারের অভিযানে মিরপুর উপজেলার মশান এলাকায় জরিমানার শিকার ভাটা মালিক
শাহিন আলী তীব্রক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দেখুন আমাদের মধ্যে শকুনের গোস্ত শকুন
খাই। আমাদের মতোই কোন ভাটা মালিক ইনটেনশনালি পরিবেশ অধিদপ্তরকে লেলিয়ে
দিয়ে বেছে বেছে এই ৪টি ভাটাই জরিমানা এবং একটি ভাটা ডেসট্রয় করে
দিয়েছে। আইন সবার জন্যই সমান হলে কোন কথা ছিলো না।
উনাদের স্বার্থহানি
ঘটলেই এধরনের অভিযান চালিয়ে শিক্ষা দেয়ার কৌশল গ্রহন করেছেন। ভাটা তো প্রায়
সবই অবৈধ। কারো ভাটার লাইসেন্স নেই, কারো পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স নেই।
এভাবে খুঁজলে ঠক বাছতে গা উজার হয়ে যাবে’। জেলায় প্রায় ২শতাধিক ভাটার মধ্যে
অভিযানের বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মমতাজ বেগম বলেন, ‘এই অভিযান পরিবেশ
অধিদপ্তরের চলমান রুটিন ওয়ার্ক। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন এবং পরিবেশ সুরক্ষা
আইন না মেনে ভাটা স্থাপন করলেই সেখানে এই অভিযান চলবে। এই অভিযানের মধ্যদিয়ে
সবাই যেনো সচেতন হয়ে উঠতে পারে সেটা আমাদের কাম্য।