আলমগীর শরীফ, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ-
ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার উত্তর চড়াইল এলাকায় ১৪ অক্টোবর ২০২৪ রোজ সোমবার সকাল ১১ ঘটিকায় ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলায় জড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। উক্ত কর্মসূচতে লিখিত অভিযোগ পাঠ করে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে মোসাঃ শাহিদা বেগম। এসময় শাহিদা বেগম বলেন যে, আমার স্বামীঃ মোঃ কাওছার খান, গ্রাম- উত্তর চড়াইল, ইউনিয়ন- আওরাবুনিয়া, উপজেলা- কাঠালিয়া, জেলা- ঝালাকাঠি। গত ০২/১০/২০২৪ ইং তারিখ এজাহার অনুযায়ী ০৫.১৫ ঘটিকার সময় আমাদের পরিবারের খুব কাছের মানুষ ও আত্মীয় মোঃ জাফর খান (৪৫), পিতা- মৃত: মুনছুর আলী খান, আমাদের একই এলাকার বাসিন্দা। উল্লেখিত সময় ও তারিখে পার্শ্ববর্তী পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের পূর্ব মাটিভাংগা গ্রামের নিকট আত্মীয়র মৃত্যু সংবাদে জানাজা নামাজে গিয়ে ফেরার পথে পূর্ব মাটিভাংগা গ্রামের জলিল হাওলাদারের বাড়ির পাশে আসিলে একদল সন্ত্রাসিরা জাফর খানকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। উক্ত ঘটনায় ০৩/১০/২০২৪ ইং তারিখ ভান্ডারিয়া থানায় নিহত জাফরের স্ত্রী লিলি আক্তার বাদি হয়ে ৯ জনকে উল্লেখ পূর্বক ও ৬ জনকে অজ্ঞাত রেখে মোট ১৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ভান্ডারিয়া থানা- ০১। মামলায় নিহতের চরম শত্রু বড় ভাই এবং অত্র মামলার ০২ নং স্বাক্ষী মোঃ মহারাজ খান পূর্ব শত্রুতার জেরে মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার লক্ষে ষড়যন্ত্র করিয়া আমার স্বামী মোঃ কাওছার খানকে ০৫ নং ও আমার ভাগ্নি মোঃ সুমন তালুকদারকে ০৯ নং আসামী করা হয়েছে। আমার স্বামী ও ভাগিনাসহ আমার পরিবারের সাথে নিহত জাফরের পরিবারের সাথে অত্যান্ত ভালো সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। জাফরের বিপদে আপদে আমরা সবসময় পাশে থেকে আসছি। কিন্তু বর্তমান জাফর হত্যা মামলার ০২ নং স্বাক্ষী জাফরের বড় ভাই মহারাজ খান এর সাথে জাফরের ও আমাদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত চরম শত্রুতা চলিয়া আসিতেছে। যার কারণে বর্তমান জাফর হত্যা মামলার ০২ নং স্বাক্ষী জাফরের বড় ভাই মহারাজ খান ছোট ভাই জাফরকে একাধিকবার হত্যা করার চেষ্টাও চালিয়েছে।
আমার স্বামী কাওছার ও ভাগিনা সুমনকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় জড়ানোর কারণ ও নিহত জাফর খানের সাথে তার বড় ভাই মহারাজ খানের বিরোধের কিছু বর্ননা পেশ করিলামঃ- ১৮/০৭/২০১৭ ইং তারিখ সকাল ৭.১৫ ঘটিকায় নিহত জাফরের বড় ভাই মহারাজ ও তার পুত্র মিলন খানের নেতৃত্বে জাফরকে উত্তর চড়াইল গ্রামে পঞ্চায়েতের বাজারে হত্যার উদ্দ্যেশে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আক্রমন করিয়া প্রায় ২২/২৩ টি কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করিয়া মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেলে রেখে যায়। কিন্তু আল্লাহপাকের অশেষ রহমতে আমার স্বামী কাওছারসহ স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় দ্রুত চিকিৎসায় নেওয়াতে প্রানে বেঁচে যান জাফর। যার মামলা নং ১২/১১০ কাঠালিয়া থানা, তারিখ: ১৮/০৭/২০১৭ ইং, ধারা- ১৪৩/৩৮৫/৩২৪/৩২৬/৩০৭/১০৯ ও ৫০৬ (।।) পেনাল কোর্ট। যার অন্যতম আসামী মহারাজ খান এবং উক্ত মামলার বাদী জাফরের পক্ষে তার আর এক আপন ভাই মোঃ কবির খান। উক্ত মামলায় আমার দেবর আলতাফ খান স্বাক্ষী থাকায় আমার স্বামী ও ভাগিনাকে জাফর হত্যা মামলায় অন্যায়ভাবে আসামী করা হয়েছে এবং ঐ-মামলায় আমার দেবর আলতাফ খানসহ পরিবারের লোকজন স্বাক্ষী থাকায় ও আহত মূমূর্ষ জাফরকে চিকিৎসায় নেওয়ায় মহারাজ খান ও তার পুত্র মিলন খান ক্ষীপ্ত হয়ে ১৬/০৫/২০২১ ইং তারিখে মহারাজ খান বাদী হয়ে কাঠালিয়া থানায় আমার স্বামী ও দেবরদের নামে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ০৬/৪৭ কাঠালিয়া থানা। "সেই মামলায় আমাদের সাথে ০২ নং আসামী করা হয়েছে বর্তমান নিহত জাফরকে"।
অতঃপর এতেও ক্ষান্ত না হয়ে উক্ত মহারাজ খান ও তার পুত্র মিলন খানের নেতৃত্বে ১০/১১/২০১৮ ইং তারিখ বিকাল আনুমানিক ০৫ ঘটিকার সময় স্থানীয় ছোট কৈখালী গ্রামের পাকা রাস্তার উপর মাহারাজ খান ও তার পুত্র মিলন খানসহ ২০/২২ জন সন্ত্রাসী নিয়ে আমার দেবর আলতাফ খানকে জীবনে শেষ করে দেওয়ার উদ্যেশ্যে দাড়ালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমন করিয়া এলোপাতারি কোপাইয়া সারা শরীরে রক্তাক্ত জখমসহ একটি পা কেটে আলাদা করে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে চলে যায়। পরবর্তীতে চিকিৎসা করাইয়া কিছু সুস্থ করিতে সক্ষম হই। বর্তমানে উক্ত দেবর আলতাফ পঙ্গুত্ববরণ পূর্বক কোনমতে বেচেঁ আছে। যার মামলা নং- ০৭, কাঠালিয়া থানা (বর্তমানেও চলমান), তারিখ- ১৪/১১/২০১৮ ইং, ধারা-১৪৩/১৪৮/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৩৭৯ ও ৫০৬ (।।) পেনাল কোর্ট। উক্ত মামলায় অন্যতম আসামী মহারাজ খান ও তার পুত্র মিলন খান এবং এই মামলার অন্যতম স্বাক্ষী নিহত জাফর খান। এতেও প্রতিয়মান হয় যে, জাফরের সাথে আমাদের আত্মার সম্পর্ক ছিলো। কিন্তু জাফরের স্ত্রীকে ভয়ভীতি দেখাইয়া ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার স্বামী ও ভাগিনাকে জাফর হত্যা মামলায় জড়াতে সক্ষম হয়েছে। উক্ত মামলার আসামী থেকে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে পরিত্রা/অব্যাহতি পাওয়ার আবেদন জানান দেশের বিচার বিভাগসহ পুলিশ প্রশাসন ও নীতি নির্ধারকদের কাছে অসহায় পরিবারের পক্ষে শাহিদা বেগমসহ এলাকাবাসী।
উক্ত মানববন্ধনের অনুলিপি প্রেরণ করেন স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।
মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি), পুলিশ হেডকোয়াটার, ঢাকা। জেলা প্রশাসক, পিরোজপুর। জেলা প্রশাসক, ঝালকাঠি। পুলিশ সুপার, পিরোজপুর। পুলিশ সুপার, ঝালকাঠি। অফিসার ইনচার্জ, ভান্ডরিয়া, পিরোজপুর ও
অফিসার ইনচার্জ, কাঠালিয়া, ঝালকাঠিগনদের।