কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে দুই শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কয়া ইউনিয়নের বেড় কালোয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের হুমায়ন শেখ (২৭) ও সদর উপজেলার হাটশা হরিপুর ইউনিয়নের পুরাতন কুষ্টিয়া এলাকার শিমুল হোসেন (৩৪)। তাঁরা উভয়ই ছররা গুলিতে আহত হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত হুমায়ন শেখ বলেন, গতকাল বিকেলে অন্তত ২০ জন শ্রমিক মিলে বেড় কালোয়া এলাকার পদ্মা নদীতে খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলনের কাজ করছিলেন। এ সময় ১৫–১৬ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই অস্ত্রধারীরা শ্রমিকদের লক্ষ্য করে ছোড়া গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় তিনিসহ দুজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন। তার হাঁটুর ওপরে ও নিচে ছোড়া গুলির আঘাত লাগে। এ ছাড়া ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
হামলাকারীদের বিষয়ে জানতে চাইলে হুমায়ন শেখ বলেন, ট্রলারের করে এসে যারা হামলা চালিয়েছিল, তারা সবাই অপরিচিত। তবে একজনের মুখে শামীম নাম বলতে শুনেছেন।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় স্থানীয় যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকজন নেতা এলাকাটির পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাঁরা আত্মগোপনে চলে যান। সম্প্রতি সেখানে বিএনপির দুটি পক্ষ বালু উত্তোলনের পাঁয়তারা শুরু করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ ও এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। গতকাল সকালে একপক্ষের লোক সেখানে বালু তোলা শুরু করে। বিকেলে গুলির ঘটনা ঘটে।
এদিকে পদ্মা নদীর কুষ্টিয়া সীমানার কোথাও বালু উত্তোলনের জন্য কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবদুল ওয়াদুদ। তিনি বলেন, যারাই বালু তুলুক—তা অবৈধ। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জানতে পেরেছি বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। দুজন আহত হয়েছেন। তবে তাঁদের অবস্থা গুরুতর নয়। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’