ফারিয়া রহমানঃ
নারায়ণগঞ্জ ডিবির দুর্নীতিবাজ এস আই সাফির বিরুদ্ধে আইজি ও ডিআইজি এবং এসপি বরাবর অভিযোগ করলে এসপি কোন ব্যবস্থা না নিয়ে সাফিকে দিয়ে অপকর্ম করিয়েছে বলে জানায় ভুক্তভোগি সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ। তিনি আরো বলেন, অভিযোগের বিচার শুরু করে সাফির নিকট অনৈতিক সুবিধা পেয়ে বিচার নিয়ে গড়িমশি করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন সাগর, তা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার পর অভিযোগকারীকে পুনরায় নোটিশ প্রেরন করে সাগর।
অভিযোগ সুত্রে, পুলিশ সুপার কার্যালয় নারায়নগঞ্জ এর স্মারক নং ৮৪৯/অপরাধ, তারিখ ১২/০২/২৪ খ্রিঃ রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়, ঢাকা এর স্মারক নং প্রসিঃ/১৭-২৪/৫(২)নোঃ ব্যঃ(অংশ-০১)/১৫৫৯,তারিখ ম০৭/০২/২৪ খ্রি ভিত্তিতে সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ নোটিশ পেয়ে তার জবাব প্রেরন করেন। স্বাক্ষীর জবাবে তিনি বলেন, সুত্রঃ সোনারগাঁ থানার মামলা নং ৩১(০৮)২৩ নারায়নগঞ্জ সদর থানার মামলা নং ৩১(১০)২৩ বিষয়ঃ পুর্ব শত্রুতা ও সংবাদ প্রকাশের জেরে ষড়যন্তমুলকভাবে, অন্যের প্ররোচনায় ও অনৈতিক সুবিধা পেয়ে এবং উদ্দেশ্য প্রনিত মামলা থেকে নিম্মস্বাক্ষরকারীর নাম প্রত্যাহার করে দোষীদের বিচার করার আবেদন করেন।
সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ বলেন, “পুর্ব শত্রুতা ও সংবাদ প্রকাশের জেরে ষড়যন্তমুলকভাবে, অন্যের প্ররোচনায় ও প্রতিহিংসায় এবং উদ্দেশ্য প্রনিতভাবে অনৈতিক সুবিধা পেয়ে সোনারগাঁ থানার মামলা নং ৩১ তারিখ ২১/০৮/২৩ ইংতে বাদী এস আই ফিরোজ সাংবাদিক সুলতান মাহমুদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে। সোনারগাঁ থানার মামলা ৩১/০৮/২৩ এর ব্যপারে ওসি মাহবুর রহমান সুমনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “ভাই তাড়াহুড়া মধ্যে ভুলে হয়ে গেছে, আপনি জামিন নিন বাকীটা আমি দেখব।”এ ব্যাপারে এস আই ফিরোজকে জিজ্ঞসা করলে তিনি বলেন,“আপনি স্যারের সাথে কথা বলেন।”
তিনি আরো বলেন, “একইভাবে ডিবির এস আই সফিউদ্দিন সাফি অনৈতিক সুবিধা পেয়ে ৬ নভেম্বর রাত ১১টায় জামতলা থেকে স্যার কথা বলবে বলে ডিবি অফিসে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার মামলা নং ৩১ তারিখ ৩০/১০/২৩ ইং সাংবাদিক সুলতান মাহমুদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে কোর্টে চালান করে। নারায়নগঞ্জ সদর থানার মামলার কথা ডিবির এস আই সাফিকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “স্যারের কথায় করা হয়েছে”কিন্তু কোন স্যার সেটা তিনি বলেন না।
ডিবির এস আই সফি অনৈতিক সুবিধা পেয়ে আমাকে সমাজে হেয় পতিপন্ন ও আর্থি ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য এই অপকর্ম করেছে। আমার স্মার্ট ফোন ক্লোন করে সমস্ত ডকুমেন্ট কপি করে রেখেছে, অনেক ব্যবসায়ী ফাইল গায়েব করে দিয়েছে। বাটন মোবাইল থেকে অডিও রেকড ডিলিট করেছে্। বিগত ১৯ অগাস্ট ২৩ ইং তারিখে ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আমি অপরাধ বিচিত্রার অফিস ৭৮ মতিঝিল, বায়তুল হক ভবন সভায় উপস্থিত ছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “আমি কোন দলের সাথে জড়িত নই বা কোন রাজনীতি করি না। বিগত ২৭,২৮,২৯ অক্টোবর ২০২৩ ইং তারিখে পত্রিকা ও সংগঠনের কাজে সিলেটে অবস্থান করি। ২৮ অক্টোবর শাহপরান থানার ওসি, কোতায়ালী থানার ওসি’র সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করি, সিএমপি’র পুলিশ কমিশনার ও ডেপুটি পুলিশ কমিশনারকে অফিসে গিয়ে না পেয়ে তাদের সাথে হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ ও কথা হয়।
২৯ অক্টোবর সকাল ১০/১০.৩০ টায় সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তারের সাথে, অতিরিক্ত জেলা মেজিষ্ট্রেট ইমরুল হাসানের সাথে ১১.৪০/১২টায়, জেলা প্রশাসক সিলেট রাসেল হাসানের সাথে ১২.৫০/১.১৫ টায় সৌজন্য সাক্ষাৎ করি। এডভোকেট খোরশেদ আলম সভাপতি জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন সিলেট মহানগর’র সাথে ১.৩০ মিনিটে, শাহপরান মাজারে খাদেমের সাথে ২ টায়, জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশনের শাহপরান কমিটির সাথে মিটিং বিকাল ৩.৩০/৪ টায় সম্পন্ন করে বিকালে বাসে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে রাত্রে নারায়নগঞ্জ পৌচ্ছি। তাহলে কিভাবে আমায় মিথ্যা মামলায় জড়ানো হল, আমার সম্মানহানী করা হল, আমাকে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ করা হল তার বিচার করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করে মিথ্যা মামলা থেকে আমার নাম প্রত্যাহরের করার অনুরোধ করেছি।
এস আই সাফির দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে তদন্তের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রুহুল আমিন সাগর’র সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি কোন প্রমান পাননি, এস আই মাহবুবের সাক্ষ্য ও বিভিন্ন প্রমাণসহ এস আই সাফি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে। সাফি বুঝাতে সক্ষম হয়েছে যে সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা, বিভিন্ন নাশকতার সাথে জড়িত থাকা সব কিছুর এভিডিয়েন্স সহ চার-পাঁচ মামলার রেফারেন্সসহ সাফি ডকুমেন্টস শো করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো তথ্য পাওয়া গেছে কিনা প্রতিবেদকের এই প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাগর বলেন, “অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি'। অভিযোগের বিপক্ষে এস আই সাফির লজিক্যাল গ্রাউন্ড ছিল ভাল কিন্তু সম্পাদক সুলতান মাহমুদ কোন লজিক্যাল গ্রাউন্ড আমাকে দিতে পারেনি।”
প্রকৃতপক্ষে ঘটনা হল, অভিযোগকারী সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ এস পি অফিস থেকে অতিরিক্ত সুপার পুলিশ (ট্রাফিক) রুহুল আমিন সাগরের নোটিশ অফিস স্টাফ দিয়ে সাগর’র অফিস থেকে নোটিশ এনে লিখিত জবাবের সাথে সমস্ত ডকুমেন্টস সংযুক্ত করে অফিসে দিয়েছে কিন্তু বার বার বলার পরেও রিসিভিং কপি দেয় নাই রহুল আমিন সাগরের অফিস থেকে। জবাবে সংযুক্তি ছিলঃ ১)বাসের টিকেট কপি ২)খাবার বিলের কপি ৩)অফিস প্রত্যায়ন কপি ৪) অডিও এবং ভিডিও ক্লিপ ইমেইলে ৫) ফেসবুকের স্কীন সর্টের কপি এবং প্রয়োজনে আরো তথ্যাদি দিবেন বলে অবগত করা হয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা সাগরকে। রুহুল আমিন সাগরের দেওয়া তারিখে অনেক ব্যস্ত থাকার পরেও সময় মত উপস্থিত হয়েছে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী সুলতান মাহমুদ। তখন সাগর এসপি রাসেলের সাথে খোশ গল্পে মেতে ছিলেন কিভাবে দুর্নীতিবাজ সাফিকে রক্ষা করা যায়। ১ ঘন্টা অপেক্ষা করে ব্যবসায়ীক মিটিং করার জন্য এসপি অফিস তথা রুহুল আমনের অফিস থেকে চলে আসে ব্যবসায়ী সুলতান মাহমুদ।
২য় নোটিশ ফতুল্লা থানার মাধ্যমে পেয়ে ফোনে কল করে ভুল ধরিয়ে দিয়ে তাকে ক্ষুদে মেসেজ পাঠানো হয় এবং ১১ জুন ২০২৪ ইং তারিখে রুহুল আমিন সাগরকে ডকুমেন্ট’র কপি হোয়াটস আপে পাঠানো হয়। ১২/০৫/২৪ ইং তারিখে তার অফিসে যাওয়ার জন্য তাগিদ কিন্তু নোটিশ ইসু করে ০৩/০৬/২৪ ইং তারিখে, ফতুল্লা থানার ওসি মেনশন করে ০৪/০৬/২৪ ইং তারিখে দায়িত্ব পায় এএসআই তৌহিদুল হক। আগে জাবাবসহ ডকুমেন্ট রেখে দিয়ে রিচিভিং স্বাক্ষর দেয়নি ও পরে এস আই সাফি অনৈতিক সুবিধা দিয়ে বিচারের দ্বার বন্ধ করছে এবং মোটা অংকের উৎকোছ দিয়ে রুহুল আমিন সাগরকে দিয়ে উল্টো বিরোধী প্রতিবেদন তৈরী করিয়ে দায়মুক্ত হয়েছে বলে মনে করেন সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ।
পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তার বক্তব্যে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, পুলিশ বাহিনীতে নিযুক্ত পুলিশ সদস্যরাই পুলিশের ভেতরে, বাইরে দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে, প্রতিবেদকের কাছে ও সাংবাদিক সুলতান মাহমুদের কাছে পুলিশের অনেক অপকর্মের তথ্য ডকুমেন্টস আছে। সুলতান মাহমুদ অনেকবার কল করে বিচারের কার্যক্রম জানতে চেয়েছেন, তদন্ত প্রতিবেদনের কপি চেয়েও পায়নি ভুক্তভোগি সাংবাদিক। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাক দিয়ে মাছ ডাকতে চাচ্ছে কিন্তু আদৌও কি পারবে অসৎ পুলিশ অফিসার। নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিকের মাসে দেড় কোটি টাকার চাদাবাজির নিউজ প্রকাশ হয়েছে আর রুহুল আমিন ছিল তার শেল্টার দাতা। ডাম্পিং করে অটো রিক্সসা থেকে যে টাকা রেকার বিলের নামে নিয়েছে তা কোন খাতে খরচ করেছে রুহুল আমিন সাগর? কাকে কাকে ভাগ দিয়ে সমস্ত টাকা আত্বসাদ করেছে। চলবে……