গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি
জামানত ও বেতন-ভাতা পরিশোধ না করার অভিযোগে গাইবান্ধায় সাকিব ট্রেডার্স লিমিটেডের ঠিকাদার শাহ মোহাম্মদ হারুন অর রশিদকে নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখেন সদর হাসপাতাল ও কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের আউটসোর্সিং কর্মচারীরা।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর)দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধা সদর উপজেলার ৫নং বল্লমঝাড় ইউনিয়নের নারায়নপুর জামতলা গ্রামে। এসময় দুই ঘন্টা যাবত অবরুদ্ধ হয়ে থাকেন এই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক হারুন।
জেলার সুন্দরগঞ্জ, সদর, সাদুল্লাপুর ও রংপুরের পীরগঞ্জসহ বেশ কিছু উপজেলা থেকে আউটসোর্সিং কর্মচারীরা এসে হারুনের বাড়িতে অবস্থান নিয়ে বাড়ি ঘেরাও করে রাখেন। এ সময় তারা দ্রুত জামানত বাবদ অর্থ ও বেতন-ভাতা টাকা পরিশোধের দাবি জানান।
যদিও অবরুদ্ধের সময় ঠিকাদার হারুনের পালিত বাহিনী কর্তৃক একজন আউটসোর্সিং কর্মচারী মারধর শিকার হয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে ১৪ জন আউটসোর্সিং কর্মচারীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের নিয়োগ দেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। তিনি একেকজন আউটসোর্সিং কর্মচারীর কাছ থেকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত জামানত নিয়ে তাদের ৫৯ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরি থাকবে বলে জানান। প্রতি মাসে বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির অবহেলার কারণে তাদেরকে ১-২ বছর পর বেতন প্রদান করা হয়।
তবে বেতন প্রদানের সময় তিনি প্রত্যেক আউটসোর্সিং কর্মচারীর কাছ থেকে ক্রস চেকের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা কেটে নিতেন। আর টাকা না দিতে চাইলে চাকরি হারানোর ভয় দেখাতেন তিনি। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই তার নিজ মতামতের ভিত্তিতে ৮ মাস বেতন বাকি রেখে ওই ১৪ জনকে বের করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া এরপর তিনি এসব পদে পুনরায় নিয়োগ বাণিজ্য করার চেষ্টা করেছেন। হারুন দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামীলীগের পৃষ্ঠপোষকতায় ঠিকাদারি ব্যবসা চালাতেন বলে অভিযোগ করছেন আউটসোর্সিং কর্মচারীরা ।
এরইমধ্যে হারুনের এসব প্রতারণার ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে সদর হাসপাতালের ১৪ জন আউটসোর্সিং কর্মচারীরা গত ৫ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
তবে অবরুদ্ধ থাকা সময়ে তার বাড়ির অফিস কক্ষে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাকিব ট্রেডার্স লিমিটেডের ঠিকাদার শাহ মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ কালবেলাকে বলেন, তারা আমার কোন কর্মচারী না তাদের চাকরি দেইনি আমি। যাদেরকে চাকরি প্রদান করেছি তারা নিয়মিতই টাকা পাচ্ছে। সর্বমোট ৭২ জনকে চাকরি প্রদান করেছি। এখন যারা এসব বলছে এগুলো ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে , দীর্ঘদিন ধরে সাকিব ট্রেডার্স লিমিটেডের ঠিকাদার শাহ মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ আউটসোর্সিং কর্মচারী নিয়োগের নামে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়াসহ নানা অনিয়ম ও প্রতারণা করে আসছেন। হারুনের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে অনেকেই নিঃস্ব হলেও তিনি একের পর এক বাড়ি-গাড়ি ও জমি কিনে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন।