ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলায় গৃহবধূ স্বর্ণা আক্তার (২২) আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গত ১০/০৯/২০২৪ ওই গৃহবধূর বড় ভাই বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় স্বর্ণা আক্তারের স্বামী মোঃ বিল্লাল হোসেন, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদকে আসামি করা হয়েছে।
স্বার্ণা আক্তার উপজেলার চামিয়াদী গ্রামের মোঃ সবুর আলীর মেয়ে। সাত পৃষ্ঠার একটি চিরকোঠ লিখে গত ০৩/০৯/২০২৪ মঙ্গলবার রাতে স্বর্ণা তার বাবার বাড়িতে বিষ পান করে পরে তাকে পরিবারের লোকজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় ৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে হেরে গেলেন স্বর্ণা আক্তার, গত ০৮/০৯/২০২৪ ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসা রত অবস্থায় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
পুলিশ ও স্বর্ণার পরিবার সূত্রে জানা যায়,২০১৯/২০২০ সালে উথুরা স্কুল এন্ড কলেজে এইচএসসি শিক্ষা বর্ষে থাকা অবস্থায় হাতিবেড় এলাকার বিল্লাল নামের এক যুবকের সঙ্গে স্বর্ণার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পড়ে ২০২০ সালে পরিবারের পছন্দ মত স্বর্ণার বিয়ে হয়।ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস মৃত্যু যেন তাকে ছুঁই ছুঁই, প্রথম স্বামীর কাছে থাকতে দিলনা বিল্লাল প্রথম স্বামীর কাছ থেকে বিভিন্ন প্রলভন দেখিয়ে প্রথম স্বামীর সাথে ডিভোর্স করান বিল্লাল। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলতে থাকে। তার পড় ২০২৩ সালে নভেম্বর মাসে পরিবারের অমতে তাঁরা ইসলামী শরিয়তমতে কাবিন মূলে বিয়ে করেন স্বর্ণা ও বিল্লাল। বিয়ের কিছু দিন পর বিল্লাল কোন প্রকার কাজ কর্ম না করায় স্বর্ণাকে যৌতুকে জন্য চাপ দেওয়া শুরু করেন, বিল্লালের দাবি ছিলো ১০ লক্ষ টাকা ও আর ওয়ান ফাইভ একটি মটরসাইকেল এবং বসত ঘরের আসভাবপ্রত্র। তাঁর বড় ভাই আদম ব্যবসায়ী হওয়াই বিল্লাল ও তার পরিবার মনে করতো স্বর্ণার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক দেওয়া সম্ভব।
স্বর্ণার পরিবারের অভিযোগ, বিল্লাল ব্যবসার জন্য ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। স্বর্ণা দুই মাসের আন্তঃসস্ত্বা হলে স্বামী বিল্লাল জোরপূর্বক স্বর্ণাকে ফুচকার সাথে সন্তান নষ্ট কারার ঔষধ খাওয়ায়, স্বর্ণাকে মারধরের এক পর্যায় পেটে লাথি মারে স্বর্ণার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে তাকে পিতার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়,পিতার বাড়ির লোকজন স্বর্ণাকে উপজেলার একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়, হাসপাতালের রিপোর্ট থেকে স্বর্ণা যানতে পারে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার গর্ভের সন্তার নষ্ট হয়ে গেছে। যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানান স্বর্ণা বাবা –মা স্বর্ণা স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে স্বামীর বাড়ির লোক জন স্বর্ণাকে সাফ জানিয়ে দেন টাকা ও মটরসাইকেল ছাড়া তাদের বাড়িতে যাইগা হবে না। মৃত্যুর আগে সাত পৃষ্ঠার চিরকোঠ লিখে মঙ্গলবার ১১ টার দিকে বাবার বাড়িতে বিষ পান করে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন।
ঘটনাস্থল থেকে চিরকোঠ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই চিরকোঠে স্বামীর উদ্দেশে লেখেন, ‘অনেক ভালোবাসি তোমাকে বিল্লাল। কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত তোমার সঙ্গে থাকতে দিলা না। অনেক ইচ্ছে ছিল, আমাদের সন্তান হবে তাও তুমি নষ্ট করে দিলে। আমার আত্মহত্যার কারন তুমি ও তোমার পরিবার।
স্বর্ণার মা জোসনা আক্তার বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে বিল্লাল প্রতারণা করে বিয়ে করছে। আমার মেয়ে একার সিদ্ধান্তে বিয়ে করায় সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করেছে। আমার মেয়ে যৌতুকের চাপে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। আমি এর সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিল্লালসহ অভিযুক্তদের বিচার চাই।
স্বর্ণার বড় ভাই মামলার বাদী মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, আমার বোনের আত্মহত্যা জন্য বিল্লাল ও তার পরিবার দায়ী, অমানবিক অত্যাচার করেছে আমার বোন অত্যাচার যৌতুকের চাপ সয্য করতে নাপেরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। আমি এর সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিল্লালসহ অভিযুক্তদের বিচার চাই।
এ ব্যাপারে ০১৭০৩-১৪৩১৩৬ বিল্লালের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ভালুকা মডেল থানার এসআই মানিকুল ইসলাম মুঠোফোনে যানায়, ময়নাতদন্ত শেষে স্বর্ণার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনায় মেয়ের বড় ভাই বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১নং আসামী বিল্লাল কে আটক করে আদালতে প্রেরন হয়েছে ।