সেলিম চৌধুরী, নিজস্ব সংবাদদাতা পটিয়া:-
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে দেশের ব্যাংকগুলো। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি-র যাত্রা ১৯৯৯ সালের ২৫ অক্টোবর থেকেই। ব্যাংকটির যাত্রা হয়েছিল প্রচলিত ধারার ব্যাংকিং দিয়ে। পরে ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ধারার ব্যাংকে রূপান্তর ঘটে। পরিচালনার ধরন ও পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের পর গত এক যুগেরও বেশি সময়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক প্রতিটি সূচকে ঈর্ষণীয় প্রবৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর মধ্যে এ ব্যাংকের অবস্থান এখন দ্বিতীয়।
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশসহ বিশ্ব অর্থনীতি একটি দুর্যোগের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে। এ দুর্যোগেও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক তার অগ্রযাত্রা বরাবরের মতো অব্যাহত রেখেছে। এরই মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক আর্থিক ভিত, আস্থা, বিশ্বাস ও সুনাম অর্জনের প্রায় ২৫ বছর পেরিয়েছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় সম্প্রতি গণমাধ্যমে ব্যাংক খাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অপব্যাখ্যা প্রকাশিত হচ্ছে। আবার বাস্তব অবস্থা বিবেচনা না করে শুধু কোন নথির ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে, যাতে ব্যাংক খাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। আবার বিভিন্ন মহল উসকানি দেওয়ার সুযোগ নিচ্ছে। যাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন ব্যাংকের আমানতকারীরা।
কারণ দেশের ব্যাংক খাত নিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। দেশের বাইরে অবস্থান করে কিছু ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন। দেশের ভেতরেও কিছু মানুষ এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। এসব ব্যক্তি আগেও বাংলাদেশ নিয়ে, ব্যাংক নিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা খবর ছড়ানো হচ্ছে।
তাই গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন। এমনকি ব্যাংক নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে বিভ্রান্তিকর নানা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা জানি গুজব অনেক সময় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেও হয়ে থাকে। স্বার্থান্বেষী মহল নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য গুজব রটিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। আবার মানুষের অজ্ঞতা, অন্ধবিশ্বাস, গোড়ামি ইত্যাদি গুজব ছড়াতে সহায়তা করে। যে সমাজের মানুষের মধ্যে সঠিক জিনিসটি উপলব্ধির ক্ষমতা কম সে সমাজে গুজব তত দ্রুত রটে বা ছড়ায়। বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা স্পষ্ট বলছেন, এসব তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই। সরকার পরিবর্তনের পর এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে সাময়িক এমনটা হওয়ার কথা। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভাবের কারণে টাকার সিকিউরিটির একটা বিষয় থেকেই যায়। তাই দেশের অবস্থা স্বাভাবিক পর্যায়ে আসলে মানুষ পর্যাপ্ত টাকা তুলতে পারবে এবং ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে ফিরে আসবে।
একটা বিষয় সবার জানা উচিত যে, বাংলাদেশের ব্যাংকব্যবস্থা অত্যন্ত সুদৃঢ় অবস্থায় রয়েছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে রক্ষিত আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ। এর পরও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাংকের আমানত তুলে নেয়ার জন্য ষড়যন্ত্রমূলক খবর প্রচার হচ্ছে। বিশেষ করে বিদেশে আমাদের প্রবাসীদের মধ্যেও এই গুজবটি ছড়ানো হচ্ছে, যাতে তারা বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে অনুৎসাহিত হন।
এগুলো খুবই দুঃখজনক। এই গুজব প্রচারকারীরা আমাদের গ্রাহকদের, সমাজের এবং দেশের ক্ষতি করছে। গুজব বর্তমানে দেশের অর্থনীতিকে, বিশেষ করে ব্যাংকের প্রতি মানুষের যে অনাস্থা তৈরি করেছে তার একটা দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। আমরা আশা করছি বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্রুত নজরদারি ও দিকনির্দেশনায় ব্যাংকিং খাত আবার স্বাভাবিক নিয়মে ফিরে আসবে। তাই বিচলিত না হয়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি-র সাথেই থাকুন।