স্টাফ রিপোর্টার
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা বজায় রাখা, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি মঙ্গলবার সকালে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে 'হাইওয়ে পুলিশের সেবা সপ্তাহ-২০২৪' উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমেদ এমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বিপিএএ, সেতু বিভাগের সচিব মোঃ মনজুর হোসেন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ মসিউর রহমান রাঙ্গা, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্লাহ এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী খান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম (বার)। অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ, সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথিগণ উপস্থিত ছিলেন। হাইওয়ে পুলিশের আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তাগণ অনলাইনে অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মহাসড়ক ব্যবস্থাকে জিরো এক্সিডেন্ট ভিশন'র আলোকে তৈরি করতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ২৫০ কিলোমিটার জুড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া, চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর, নির্মাণাধীন মহেশখালী মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপন, সরকারি ও বেসরকারি ১০০টি ইকোনমিক জোন, নৌ বন্দরসমূহের সংযোগ সড়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রসমূহ মহাসড়কের সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা অতীব জরুরি।
এক্ষেত্রে হাইওয়ে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সিনিয়র সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বিপিএএ বলেন, হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, যাত্রী ও পণ্য পরিবহন এবং মহাসড়কের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সভাপতির বক্তব্যে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেন, যে কোন অনিময়ের বিরুদ্ধে আমরা 'জিরো টলারেন্স' নীতি গ্রহণ করছি। কোন পুলিশ সদস্য অনিয়মের সাথে জড়িত থাকলে তার ক্ষেত্রেও নমনীয় নীতি দেখানো হয় না। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। এ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সুফল মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে হাইওয়ে পুলিশ সীমিত জনবল দিয়ে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। আইজিপি মহোদয় বলেন, হাইওয়ে পুলিশের সেবা সপ্তাহ-২০২৪ থেকে প্রতিজ্ঞা নিয়ে আগামীতে জাতির পিতার স্বপ্নের 'সোনার বাংলা' এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত 'স্মার্ট বাংলাদেশ' বিনির্মাণে সবাইকে স্মার্ট পুলিশ হয়ে মহাসড়ককেন্দ্রিক জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করে বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, সততা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বলেন, সুশৃঙ্খল মহাসড়ক গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে হাইওয়ে পুলিশের সেবা সপ্তাহ-২০২৪ পালন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, জনগণের আস্থা অর্জনের মধ্য দিয়ে হাইওয়ে পুলিশ নিরাপদ মহাসড়ক গড়তে চায়। তিনি আইন মেনে চলার সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইওয়ে পুলিশের সার্বিক কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। প্রধান অতিথি 'বডি ওর্ণ ক্যামেরার' কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে বেলুন উড়িয়ে হাইওয়ে পুলিশের সেবা সপ্তাহ-২০২৪ উদ্বোধন করেন। হাইওয়ে পুলিশের সেবা সপ্তাহ ১৩ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত হাইওয়ের ৮টি রিজিয়নে পালিত হবে।