সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জে শীত মৌসুম প্রায় শেষের দিকেও চলছে খেজুর রস সংগ্রহ কাজ, 

স্টাফ রিপোর্টার 

শীত মৌসুম প্রায় শেষের দিকেও খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা। আর এ ব্যস্ত কর্মযজ্ঞ চলছে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের সোনাখাড়া ইউনিয়নের মৌহার দোস্তপাড়া,নিমগাছী ও ধামাইনগরের বাঁকাই এলাকার ঝোঁপ-ঝাড়, রাস্তার ধার ও বসত বাড়ির আঙ্গিনায় বেড়ে ওঠা খেজুর গাছ গুলোতে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায়, বসতবাড়ি, পুকুর পাড়ে ও পরিত্যাক্ত ভিটে অযত্ন অবহেলায় বেড়ে ওঠা ছোট-বড় প্রায় ৫’শতাধিক খেজুর গাছ রয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় বসতবাড়ি পুকুর পাড়ে ও পরিত্যাক্ত ভিটে-ভাটিতে বেড়ে ওঠা ছোট-বড় খেজুর গাছ গুলোর ডাল পালা পরিস্কার ও নল (চুঙ্গি) লাগানোর কাজ করছেন গাছিরা। আর স্থানীয় গাছিদের পাশাপাশি রাজশাহীর সিংড়া উপজেলা থেকে আসা প্রায় ১০ থেকে ১৫টি গাছির দলও এ কাজ করছেন।ইতিমধ্যে গাছির দল গুলো উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় ভাটি স্থাপন করেছেন।

এ ছাড়াও তারা রস থেকে গুড় তৈরীর জন্য জ্বালানী হিসেবে সংগ্রহ করছেন নাড়া (খড়) ও গার্মেন্টের বর্জ্য ঝুট। এখন খেজুর গাছ গুলো রসের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরীর কাজ শুরু করবে এমনটাই জানালেন রাজশাহীর চারঘাট থেকে আসা গাছি আব্দুল কুদ্দুস হোসেন (৩৪)।

রায়গঞ্জের ধামাইনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা গাছি আহাদ হোসেন বলেন, শীতের শুরুতেই এলাকার খেজুর গাছ মালিকদের কাছ থেকে গাছ প্রতি ৩ কেজি থেকে সাড়ে ৩ কেজি গুড়ের বিনিময়ে খেজুর গাছ গুলো লীজ নেয়া হয়েছে। যাতে শীত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে পাটালী ও ঝোলা গুড় তৈরী করা যায়।

এ দিকে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার তুলশীপুর (হরিপুর) গ্রামের গাছি মফিজুল হোসেন জানান, এ বছর রায়গঞ্জ উপজেলায় রাজশাহী অঞ্চল থেকে ১০ থেকে ১৫টি গাছির দল এসেছে। কার্তিক মাসের প্রথমেই এসে এলাকার খেজুর গাছ মালিকদের কাছ থেকে গাছ প্রতি ৩ কেজি থেকে সাড়ে ৩ কেজি গুড়ের বিনিময়ে খেজুর গাছ গুলো লীজ নেয়া হয়েছে।

আগে এলাকার মাঠ থেকে খড় সংগ্রহ করে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার হত। কিন্তু বর্তমানে এলাকায় জ্বালানীর সংকট থাকায় গুড় তৈরীর জন্য জ্বালানী হিসেবে গার্মেন্টেস এর বর্জ্য ঝুট কিনে আনতে হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আগামী ফালগুন মাস পর্যন্ত খেজুর গুড় তৈরী সম্ভব হবে।

এ দিকে পরিবেশ বিদরা বলছে, জনপদের সাধারণ মানুষ সচেতন না হওয়ার কারণে পরিবেশবান্ধব এ খেজুরের গাছ ইট ভাটায় জ্বালানি হিসাবে বেশি ব্যবহার করার কারণে খেজুর গাছ চোখে পড়ে না। কমছে শুধুই খেজুর গাছের সংখ্যা। সময়ের সঙ্গে বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবন-যাপন, হারিয়ে যাচ্ছে দেশের প্রচলিত সংস্কৃতি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রউফ জানান, শীত মৌসুমে খেজুরের রস থেকে তৈরীকৃত গুড় সবার কাছেই বেশ সমাদৃত। খেজুর রস থেকে কৃষকের বাড়তি আয় হয়। সে জন্য কৃষকদের বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুর পাড়ে ও ভিটে-ভাটিতে থাকা খেজুর গাছের যত্ন নেয়া প্রয়োজন।

Leave a Reply