শাহারিয়ার শান্ত, পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বস্তায় আদা চাষ। বানিজ্যিক ভাবে সফল এই ফসল পতিত জায়গায় বস্তায় চাষ করে লাভজনক হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকছেন আদা চাষে। এতে করে নিজেদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে বিক্রয় করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। বস্তায় আদা চাষ করতে উপজেলায় আগ্রহী চাষিদের উদ্বুদ্ধ করার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে কৃষি বিভাগ।
এ উপজেলায় মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় প্রান্তিক কৃষককে প্রদর্শণীর মাধ্যমে প্রায় ৫শ বস্তায় আদা চাষ করার সহায়তা করা হলেও অনেকেই নিজ উদ্যোগে ৫ থেকে ১৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রকল্প সহায়তায় প্রায় ৩০ জন আদা চাষিকে প্রত্যককে ৫শ বস্তায় আদা চাষ করার জন্য প্রয়োজনীয় বীজ,সার ও অন্যান্য উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু অত্যান্ত লাভজনক এই প্রযুক্তি দেখে অনেক কৃষক এতে উব্দ্বুদ্ধ হয়ে অত্র উপজেলার প্রায় ২শ ৫০ থেকে ৩শ জন কৃষক বানিজ্যিক ভাবে আদা চাষ শুরু করেছেন। তাছাড়া অনেকেই পারিবারিক চাহিদা মেটানোর জন্য ১০ থেকে ২০ বস্তায় আদা চাষ করেছেন।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক কৃষকদের আদা চাষ,আদার রোগবালাই দমন ও বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পরামর্শ সেবা প্রদান করছে।এই উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর আম বাগানের জমিতে আদা চাষ হচ্ছে।
আদা চাষের জন্য বস্তা প্রতি মাটি ১০ থেকে ১২ কেজি,গোবর-৪ কেজি,ভার্মিকম্পোট-২কেজি,টি.এস.পি-২০ গ্রাম, এম.ও.পি-৭.৫ গ্রাম,ছাই-১ কেজি,দস্তা-০৫ গ্রাম, বোরন-০৫ গ্রাম দিয়ে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। এরপর ১৫ থেকে ২০ দিন মাটিকে পলিথিনে ঢেকে দিয়ে রাখতে হবে। পরিশেষে এভাবে তৈরিকৃত মাটি দিয়ে বস্তা ভরাট করে এতে ২-৩ খন্ড ৭০ গ্রাম আদা রোপণ করতে হবে।
পরবর্তিতে কাঙ্গিত ফলন পেতে ভালভাবে পরিচর্যা করলে বস্তা প্রতি ১ থেকে ১.৫ কেজি পর্যন্ত আদা পাওয়া যেতে পারে।
বস্তা প্রতি আদা লাগানো থেকে শুরু করে আদা তোলা পর্যন্ত আনুমানিক ৪০ টাকা খরচ হয়। এ পদ্ধতিতে আদার রোগবালাই অনেক কম হয় এবং রোপনের পরে আর সার প্রয়োগ করতে হয় না।
সহজ ও লাভজনক এই পদ্ধতি তাই দিন দিন কৃষকদের মাঝে জনিপ্রয় হয়ে উঠছে।
নজিপুর ইউনিয়নের ফয়েমপুর গ্রামের আদাচাষি মো.আবুল কালাম আজাদ(৪০)বলেন,খুব সহজেই বস্তায় আদা চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। আমার ১৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ টাকা।আর আদার দাম ভালো থাকলে ১২-১৫ লাখ টাকার বিক্রয় হবে বলে আশা করছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো.সোহরাব হোসেন বলেন,যে কোন পতিত ও ছায়াযুক্ত স্থানে বস্তায় আদা চাষ করা সম্ভব।সেক্ষেত্রে আম বাগানের নিচে বস্তায় আদা চাষ করলে চাষিরা একটা বিরাট আয়ের সুযোগ পাবেন।তাই আম বাগানের নিচে বস্তায় আদা চাষের জন্য কৃষকদের পরামর্শ ও সর্বক্ষণিক সেবা প্রদানে কৃষি বিভাগ নিরিলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বাড়ি নং-৬৬, সোনারগাঁ জনপথ রোড, সেক্টর -১১, উত্তরা ঢাকা-১২৩০
মোবাইল নং: ০১৯৮৫২৩১১১২
Copyright © 2025 টপ নিউজ প্রতিদিন | বাংলা নিউজ পেপার. All rights reserved.