হৃদয় রায়হান কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সামনে রেখে কুষ্টিয়ার মণ্ডপগুলোতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রতিমা তৈরিতে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। আয়োজকেরা শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর কুষ্টিয়া জেলায় পূজামণ্ডপের সংখ্যা ২২টি বেড়ে মোট ২৫০টিতে দাঁড়িয়েছে।
বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও চলছে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ। আবার কোথাও শুরু হয়েছে রঙের কাজ। আপন মনে প্রতিমাগুলো ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পীরা। এখন শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আয়োজকেরা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মালম্বীদের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ।
প্রতিমাশিল্পী কুমারেশ দাস জানান, শেষ সময়ে প্রতিমাশিল্পীদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার চাহিদা বেশি।
মিলপাড়া সাবর্জনীন পূজামন্দিরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী বাগচী বলেন, ‘আশা করছি প্রতিবছরের মতো এ বছরও উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রশাসনের সহযোগিতা ও আশ্বাসে আমরা আমাদের পূজার কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি ধর্মকে সম্মান জানানো প্রত্যেক মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমাদের উৎসবে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে এলাকার সবাই আমাদের পাশে থাকেন। আশা করি এবারও তার ব্যতয় হবে না।’
কুষ্টিয়া মহাশ্মশান মন্দিরের পুরোহিত পলাশ চক্রবর্ত্তী বলেন, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের সূচনা হবে। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী এবং ২ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। এবার পৃথিবীতে দশভুজার আগমণ হবে হাতিতে চড়ে আর কৈলাশে ফিরবেন দোলায়।
জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ছয় উপজেলায় ২৫০ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৮১টি, খোকসা উপজেলায় ৫৯টি, কুমারখালী উপজেলায় ৫৯টি, মিরপুর উপজেলায় ২৮টি, ভেড়ামারায় ১১টি ও দৌলতপুরে ১২টি মণ্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের তুলনায় এবার ২২টি মণ্ডপে পূজা বেড়েছে।
কুষ্টিয়া জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়দেব বিশ্বাস বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ২২টি পূজা বেশি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতাদের বৈঠক হয়েছে। ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপের তালিকা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিটি পূজামন্দিরে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে পূজা মন্দিরে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হবে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, ‘যার যার ধর্মীয় উৎসব স্বাধীনভাবে ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করা তাদের অধিকার। কোনো প্রোপাগান্ডা ও গুজবে কান দেওয়া যাবে না। বর্তমান সরকার মবের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। মব সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বাড়ি নং-৬৬, সোনারগাঁ জনপথ রোড, সেক্টর -১১, উত্তরা ঢাকা-১২৩০
মোবাইল নং: ০১৯৮৫২৩১১১২
Copyright © 2025 টপ নিউজ প্রতিদিন | বাংলা নিউজ পেপার. All rights reserved.