আলামগীর শরীফ, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
“বিচারের নামে অবিচার হয়, নারী কোথাও নিরাপদ নয়” এই শ্লোগানের মধ্য দিয়ে ঝালকাঠিতে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস ২০২৪ পালিত হয়েছে। ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যাকালীন এ দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হয়। বেসরকারি সংস্থা নারী পক্ষ, তারুণ্যের “কন্ঠস্বর ও সাইডোর উদ্যোগে আলোচনাসভা, র্যালি, স্মারকলিপি প্রদান ও শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জলন করা হয়।
উক্ত দিবসে ঝালকাঠি সদর, নলছিটি, রাজাপুর ও কাঠালিয়ার প্রায় শতাধিক যুবনারী ও তরুণ-তরুণী অংশগ্রহণ করেন। এতে ঝালকাঠির বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক ও গবেষক এবং কবিতাচক্রের সাধারণ সম্পাদক মু: আল আমীন বাকলাই এর নেতৃত্বে নারীরা জেলা প্রশাসক জনাব আশরাফুর রহমানকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে দিবসের কর্মসূচি সূচনা করেন। অপরাহ্নে জনাব আল-আমীন বাকলাই ও সাইডো পরিচালক সৈয়দ হোসাইন আহমেদ কামালের নেতৃত্বে ঝালকাঠি সাংবাদিক ক্লাব থেকে একটি র্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব ফারহানা ইয়াসমিন এর নিকট স্মারকলিপি উপস্থাপন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার অফিস থেকে নেমে নারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জনাব নাঈমুন্নাহার। র্যালি শেষে ঝালকাঠি টেলিভিশন সাংবাদিক ক্লাবের হল রুমে মু: আল-আমীন বাকলাই এর সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন রাফিউর রহমান, রাজাপুরের সমন্বয়ক শামসুন্নাহার, নলছিটির সমন্বয়ক তুলি আক্তার, ঝালকাঠির সমন্বয়ক সুমাইয়া, এছাড়াও সংশপ্তক ঝালকাঠি জেলার সোনিয়া আক্তার।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীদের পেশা, পোষাক-পরিচ্ছেদ, সাজ-সজ্জা, টিপ পরা, মাথায় কাপড় না দেওয়া ও একা একা চলা নিয়ে প্রকাশ্যে জনসমক্ষে হয়রানি নির্যাতন ও মারপিট করা হয়। কিছু মানুষ একত্রিত হয়ে এগুলো করছে আবার অন্য মানুষরা নীরবে দেখছে, অনেক সময় তাদেরকে উৎসাহিত করছে। নারীকে তার পেশা, পোষাক পরিচ্ছেদ, সাজসজ্জা, চলাফেরায় বাধা দান হয়রানি ও নির্যাতন করা- পিটানো বা তার উপর কোনরকম সহিংস আচরণ ও তার ভিডিও ধারণ প্রকাশ করা নির্ঘাত অন্যায়, আইনত দণ্ডনীয়, মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এর বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট নারীদের দাবি নামা পড়ে শুনান সোনিয়া আক্তার এতে বলা হয় নারীর উপর সকল প্রকার হয়রাণী, নারী নির্যাতন, সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে সরকার ও প্রশাসনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নারীর উপর যেকোনো ধরনের সহিংসতা সংগঠনকারী ব্যক্তি ও তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দানকারীকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচারের আওতায় আনতে হবে। নারী নির্যাতনের কোন ঘটনা ঘটতে দেখলে বা শুনলে তাৎক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনকে জানাতে হবে। জন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এছাড়াও সংবাদ মাধ্যমগুলো নারীর প্রতি অধিকতার সংবিধানশীল থেকে নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানানো হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীগণ ঘটনার শিকার নারীকে হেয় প্রতিপন্ন না করে ঘটনা সংগঠনকারীদের চিহ্নিত করে আইনের হাতে তুলে দিতে সহায়তা করুন।কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিথী শর্মা বণিক, শামসুন্নাহার, হীরা মনি, মুক্তা মনি, হনুফা, শামীমা, আরজু, সানজিদা রহমান, নাসরিন আক্তার মুক্তা, বাকির, সাবিনা ইয়াসমিন প্রমূখ। সন্ধ্যার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারীরা মোমবাতি প্রচলন করে এই দিবসের সমাপ্তি ঘটান।