, বাউল গান ও ভক্ত মিলনমেলা আজ নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
দক্ষিণ বঙ্গের বাউল সম্রাট ক্ষ্যাত ক্ষ্যাপা বাউল কানাই শাহের ৩৪ তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে যশোরের ঝিকরগাছার শংকরপুরে আজ সোমবার এক সাধুসঙ্গ, বাউল গান ও ভক্ত মিলনমেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলা ১৩৯৮ সালে তিনি এ ধরণী থেকে বিদায় নেয়। ১৩ ফাল্গুন প্রতিবছর এই দিনে তাঁর উত্তরসূরী বাউল আব্দুল জব্বর চিসতি ঝিকরগাছার শংকরপুরে কানাই শাহ সরণে সাধুসঙ্গ, বাউল গান ও ভক্ত মিলনমেলা করেন। এ উপলক্ষ্যে কয়েক দিন আগে থেকেই ভক্ত-শিষ্য ও সাধুদের আনাগোনা শুরু হয় অনুষ্ঠানস্থালে।
কানাই শাহের তিরোধান দিবস উপলক্ষে তাঁর ভক্ত- শিষ্য ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে সরগম হয়ে উঠা অনুষ্ঠানে অন্যন্য বছরের ন্যায় এবারও থাকছে বিভিন্ন আয়োজন। যার মধ্যে রয়েছে সাধুসঙ্গ, আলোচনা সভা ও বাউল গান।
এসকল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা। শংকরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা ও বাগআঁচড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আবু সাঈদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শংকরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান গোবিন্দ চাটার্জী, বাঁকড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ফকির পান্নু মিয়া, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম পশারী ও মহাসীন আলী মেম্বর, আওয়ামীলীগ নেতা নাজমুর ছায়াদ, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক জাহিদ হাসান পলাশ, যুবলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন ও মুনছুর আলী।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় থাকবেন ফকির ছমির আলী চিশতি। সূত্রে জানা গেছে, ক্ষ্যাপা বাউল কানাই শাহ ছিলেন লালন সাঁইজির চতুর্থ ধাপের শিষ্য।
তাঁর একটি পাণ্ডুলিপিও বাংলা একাডেমিতে জমা আছে। ক্ষ্যাপা বাউল কানাই শাহ বাংলা ১৩০৩ সালের ৩ ভাদ্র কপোতাক্ষ নদের তীরে বাঁকড়া গ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেড়ে উঠেন। কিশোরকাল থেকে তিনি বাংলা পুরোনো ঐতিহ্য লোকসংগীতের চর্চা শুরু করেন।
একপর্যায়ে তিনি বাউল গান লেখার পাশাপাশি সুরকার ও শিল্পী হিসাবে ক্ষ্যাতি পান। ১৯৮৩ সালে ভারতের তাৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে কানাই শাহ কলকাতার শান্তি নিকতনে বাউল সংগীত অনুষ্ঠানে স্বরচিত বাউল গান পরিবেশন করেন।
সে অনুষ্ঠানে কানাই শাহ ক্ষ্যাপা বাউল উপাধিতে ভূষিত হন। ১৯৭৮ সালে তিনি ফোকলায় চার দিনব্যাপী বাউল মেলায় শ্রেষ্ঠ বাউল শিল্পী নির্বাচিত হন।
জীবদ্দশায় সহস্রাধিক বাউল গান রচনা করেন কানাই শাহ। পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি বাউল গান নিয়ে সময় কাটিয়েছেন। সারা দেশে তাঁর অসংখ্য ভক্ত-শিষ্য রয়েছে। তিনি এ ধরণীর মায়া ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের নিয়মিত শিল্পী ছিলেন।