কামরাঙ্গীরচরে গৃহবধূ হত্যার মূল হত্যাকারী এবং হত্যাকান্ডে সহযোগীসহ গ্রেফতার ২

স্টাফ রিপোর্টার

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের লালবাগ বিভাগের কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ থানা এলাকায় গৃহবধূ রোজিনা হত্যার মূল আসামী ও তার সহযোগীকে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন খোলামোড়া এলাকা গ্রেফতার করে এবং হত্যার কাজে ব্যবহৃত আয়নার ভাঙ্গা অংশ বিশেষ উদ্ধার। গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ঃ ১। মালা সাহা (২৫), ২। সঞ্জিত সাহা @ আকাশ (৩১)।

উল্লেখ্য অত্র মামলার ভিকটিম গত দেড় বছর পূর্বে নওমুসলিম মোঃ আকাশ ওরফে সঞ্জিত সাহা এর সহিত বিবাহ হয়। বিবাহের পরে তাদের ঘরে সৌরভী (৪ মাস) নামীয় একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। কিছুদিন পরে ভিকটিম জানতে পারেন যে, তাহার স্বামী পূর্বে আরোও একটি বিবাহ করেছে। সেই ঘরে দুটি সন্তান আছে। উক্ত ঘটনার বিষয়ে স্বামী-স্ত্রী এবং ১ম স্ত্রী ধৃত মূল আসামী এর মধ্যে প্রায় সময়ই ঝগড়া-বিবাদ হত।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৯ ফেব্রæয়ারী ২০২৪ তারিখ সকাল ০৯.০০ ঘটিকা হইতে ২৩.০০ ঘটিকার মধ্যে যে কোন সময় কামরাঙ্গীরচর থানাধীন বড়গ্রাম ওয়াপদা মসজিদ সংলগ্ন হাজী মোঃ বদরুদ্দিন এর বাড়ীর ২য় তলার পূর্ব পার্শ্বের ফ্ল্যাটের উত্তর-পূর্ব কোনে ভিকটিম ও তার ৪ মাসের শিশু কন্যা সৌরভী সহ শয়ন কক্ষে অবস্থান করা কালে ভিকটিম এর স্বামী আকাশ ওরফে সঞ্জিত সাহার যোগ সাজসে ধৃত মূল আসামী ধারালো অস্ত্র দ্বারা উপর্যপরি গালের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম ও গলা কাটা জখম করিয়া হত্যা নিশ্চিত করে কৌশলে পালিয়ে যায়।

উক্ত বিষয়ে ভিকটিম এর বাবা মোঃ আঃ রহিম বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় এজাহার দায়ের করিলে একটি হত্যা মামলা রুজু হয়।

পরবর্তীতে লালবাগ বিভাগে কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ কর্তৃক ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন এবং ঘটনা সংঘটনকারী ধৃত মূল আসমী ও তার সহযোগীকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে সম্ভাব্য সকল স্থানের আনুমানিক ৫০/৬০ টি সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষন করা হয় এবং ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন খোলামোড়া এলাকা থেকে মূল আসামী মালা সাহা ও সঞ্জিত সাহা আকাশকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের পর আসামীদ্বয় কৌশলে ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয় এড়িয়ে যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন কলা-কৌশল ও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত মূল আসামী স্বীকার করে যে, পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাসা থেকে আয়নার একটি ভাঙ্গা অংশ নিয়ে শাড়ীর উপরে বোরকা ও হিজাব পড়ে ০৯ ফেব্রæয়ারী ২০২৪ তারিখ দুপুর ১১.২০ ঘটিকা হতে ১২.৩০ ঘটিকার মধ্যে ভিকটিমের এর ভাড়া বাসা কামরাঙ্গীরচর থানাধীন বড়গ্রাম ওয়াপদা মসজিদ সংলগ্ন হাজী মোঃ বদরুদ্দিন এর বাড়ীর ২য় তলা পূর্ব পার্শ্বের ফ্ল্যাটের উত্তর-পূর্ব কোনে শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে আয়নার একটি ভাঙ্গা অংশ দিয়ে ভিকটিম এর মুখ মন্ডলের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত কাটা জখম ও গলা কাটা জখম করে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।

আসামী উক্ত ঘটনায় জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে এবং ঘটনার দিন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাহার স্বামীর ২য় স্ত্রী ভিকটিম রোজিনাকে আয়নার একটি ভাঙ্গা অংশ দ্বারা গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম ও গলা কাটা জখম করে হত্যা করে কেরানীগঞ্জ পালিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় হত্যা কাজে ব্য আয়নার একটি ভাঙ্গা অংশ বুড়িগঙ্গা নদী পাড় হওয়ার সময় মাঝ নদীতে ফেলে দেয়।

কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ ঘটনার মুল রহস্য উদঘাটন করে আসামীদ্বয়কে গ্রেফতার করে। ঘটনা সংঘটনের কাজে ব্যবহৃত আয়নার অবশিষ্ট অংশ ও ঘটনার সময় আসামীর পরিহিত গোলাপী রংয়ের বোরকা, কালো রংয়ের হিজাব এবং প্রিন্টের শাড়ি আলামত হিসাবে জব্দ করা হয়। ধৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।

Leave a Reply