দুপচাঁচিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোছাঃ শামসুন্নাহার এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি অনিয়ম অর্থ আত্মসাৎ এর তদন্ত শুরু

মোঃ কাওছার মিয়া দিপু (বগুড়া) জেলা প্রতিনিধি

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছা. শামছুন্নাহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ তদন্ত শুরু হয়েছে।

নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. আবু হেনা মোহাম্মাদ রায়হানুজ্জামান সরকারকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তদন্ত কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোহাম্মাদ রায়হানুজ্জামান সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে, গতকাল বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে তার তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছা. শামছুন্নাহার।

এরপরই বছরের ৯ নভেম্বর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ১৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর তার অনিয়ম, দুর্নীতির ও অর্থ আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। ওই অভিযোগ বলা হয়, যোগদানের পর থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবৈধভাবে রতবদল করেন ডা. শামছুন্নাহার। একইসঙ্গে অনিয়মের মাধ্যমে অর্থআত্মাতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।

বর্তমানে বিএমএ বগুড়া ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ বগুড়া কতিপয় নেতার দাপটে তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। সেখানে আরও বলা হয়, ডা. শামছুন্নাহার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে অনেক দামি গাছ কেটে বিক্রি করে টাকা আত্মসাত করেছেন। এছাড়া করোনাকালীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাতা উত্তোলন করে কৌশলে আত্মসাত করেন। অন্যদিকে হাসপাতালে রোগীদের টিকিটের টাকাও ভিন্ন রশিদে আদায় করে আত্মসাত করেছেন তিনি।

এছাড়া অখ্যাত কোম্পানির নিম্নমানের ওষুধ ক্রয় করে সরকারে টাকা আত্মসাত করেন। ওই ওষুধ মানুষের রোগ প্রতিরোধে তেমন কাজে আসছে না। অভিযোগে রয়েছে, ডা. শামছুন্নাহার যোগদান করেই বহির্বিভাগ ফার্মেসিতে অভিজ্ঞ ও পুরাতন ফার্মাসিস্ট একলিমুর রহমান দোয়েল ও বখতিয়ার আহসানকে অবৈধভাবে সরিয়ে তার পছন্দের ব্যক্তিকে ইনচার্জ হিসাবে পদায়ন করেন।

স্টোর কিপার পদেও তার পছন্দের ব্যক্তি জুনিয়র স্বাস্থ্য সহকারী রবিউল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। এরপর থেকেই ইচ্ছে মতো সরকারী ওষুধ নয়-ছয় করে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেন তিনি। এছাড়াও ২০২৩ সালের জুন মাসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঠিকাদারের মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকার ওষুধ, দামি ইনজেকশন, স্যালাইন ও এমএসআর পণ্য (গজ, ব্যান্ডেজ, বেড কভার ও সার্জিক্যাল পণ্য) ক্রয় করেন এবং ঠিকাদারের বিলও পরিশোধ করেন।

এক্ষেত্রে নিয়ম না মেনে ক্রয় করা মালামালগুলো স্টোর রুমে না রেখে সরকারি আবাসিক ভবনে রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব জিনিস পুনরায় ঠিকাদারের মাধ্যমে ফেরত প্রদান করে আত্মসাত করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি ক্রয়নীতি উপেক্ষা করে নিম্নমানের কোম্পানির কাছ থেকে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার আয়ুবের্দিক মেডিসিন ক্রয় করা হয়েছে বলেও ওই লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এসব অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামছুন্নাহারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে, তিনি কোনো কথা বলবেনা বলে জানান। তদন্তের বিষয়টি স্বীকার করে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. আবু হেনা মোহাম্মাদ রায়হানুজ্জামান সরকার বলেন, ‘তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে এখনি কিছু বলা যাবে না। তদন্ত শেষে রিপোর্ট দিলে, সেখান থেকে জেনে নেবেন।

Leave a Reply