
স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ:-
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরলক্ষীপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আব্দুর রহমান জলাবদ্ধ ১৫ শতক জমিতে সম্পূর্ণ জৈবিক পদ্ধতিতে লাউ চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে তরল জৈব সার ব্যবহার করেই তিনি দ্বিগুণ ফলন পেয়েছেন।
এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তার জমিতে প্রচুর পরিমাণে লাউ ঝুলছে। আশেপাশের ক্রেতারা সরাসরি জমি থেকে লাউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ক্রেতাদের ভাষ্যমতে, আব্দুর রহমানের জমির লাউ দেখতে সুন্দর এবং খেতে স্বাদ বেশি।
আব্দুর রহমান জানান, গত বছর একই জমিতে ধান চাষ করে তেমন লাভ পাননি। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে এবার তিনি ৩ ফুট উঁচু পাড় তৈরি করে লাউ চাষ শুরু করেন। তিনি বীজ বপনের সময় ট্রাইকোডার্মা ব্যবহার, জমির মাটি শোধনের জন্য ডলোচুন প্রয়োগ, শাখা কর্তন ও ২জি-৩জি কাটিং, সরিষার হরলিক্স সার এবং ফুল সময় তরল জৈব সার ব্যবহার করেছেন। পোকামাকড় দমনে তিনি হলুদ আঠালো ফাঁদ, ফেরোমেন ফাঁদ ও মিষ্টি কুমড়ার বিষ টোপ ব্যবহার করেছেন।
তিনি বলেন, “ধানের তুলনায় রাসায়নিক সার খুব কম ব্যবহার করলেও আল্লাহর রহমতে জমি ভালো আছে। প্রচুর লাউ উঠছে। প্রতিটি লাউ ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি করছি। বিষমুক্ত লাউ চাষ করেও এত ফলন হবে তা জানা ছিল না। যদি বাজারে নিরাপদ লাউ বেশি দামে বিক্রি করা যেতো, লাভ আরও বেশি হতো।”
উপজেলা কৃষি অফিসার জুবায়রা বেগম সাথী বলেন, “আমরা কৃষকদের নিরাপদ ও বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করছি। ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. সালমা লাইজু স্যারের বিশেষ উদ্যোগে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে তরল জৈব সার ও হরলিক্স সার ব্যবহারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এবং কৃষকরা ভালো সাড়া দিচ্ছেন। কীটনাশক ব্যবহার না করে ফেরোমেন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করলে কৃষকের খরচ কমে এবং লাভ বাড়ে।”
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, আব্দুর রহমানের এই সফলতা দেখে অনেকেই এখন জৈব পদ্ধতিতে লাউ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।