আপন ভাতিজা কৃষ্ণ বসাক

জয়পুরহাট থেকে ফিরে জুলফিকার আলী জুয়েলঃ জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী বাজারের দাদন ব্যবসায়ী কুখ্যাত খুনি সন্ত্রাসী শ্রী কৃষ্ণ বসাক গ্রেফতার হয়েছে গত শনিবার। শ্রী কৃষ্ণ বসাক এর পারিবারিক সূত্রে যানা যায় যে, গত ৯ নভেম্বর শনিবার জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ মঈনুল ইসলাম এর নেতৃত্বে রায়কালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা শ্রী কৃষ্ণ বসাক তার আপন চাচী শ্রীমতী সপ্তমী রানী বসাককে বিগত-১৯-০১-২০২০তারিখ আনুমানিক বেলা ১১.৩০মিনিটে কয়েকজন পেশাদার সন্ত্রাসীদের সার্বিক সহযোগীতায় দেশীয় ধারালো চাপাতী দ্বারা ‘গলা কেটে হত্যা’ করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাটি পারিবারিক ভাবে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য কথিত কয়েকজন টোকাইকে এই হত্যা মামলায় জড়িত করে গ্রেফতার দেখানো হলেও কিছু দিন পর গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিজ উদ্দোগে জামিনে ছাড়িয়ে আনেন শ্রী কৃষ্ণ বসাক এবং তার নিহত চাচী শ্রীমতী সপ্তমী রানী বসাকের পরিবার।
শ্রী কৃষ্ণ বসাক জম্ম ৩১ ডিসেম্বর ১৯৮৫ সালে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী হিন্দু পাড়ায়। তার পিতা শ্রী রঘুনাথ বসাক। তিনি বংশগত ভাবে কাপড়ের ব্যবসায়ী এবং কাপড়রে ব্যবসার আড়ালে স্বর্ণের গহনা বেচা কেনার নামে চড়াসূদে টাকার ব্যবসা করতেন। শ্রী কৃষ্ণ বসাক রায়কালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৯১ সালে প্রাথমিক সমাপনী এবং ১৯৯৭ইং সালে রায়কালী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি এবং বগুড়ার আদমদিঘী থানার আলতাফনগর ডিগ্রী কলেজ থেকে ডিগ্রী পাশ করেন।

স্থানীয় সূত্রে যানা যায় যে, ছাত্র জীবন থেকেই শ্রী কৃষ্ণ বসাক যৌন পিপাসু হওয়ায় একাধিক নারী কেলেংকারী ঘটনা ঘটিয়েছে বিগত দিনে। ১৯৯৪ইং সালে তার হাইস্কুল পড়–য়া একই ক্লাশের বান্ধবী সালমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নিজ বাড়িতে নিয়ে ধর্ষন করে। তার কয়েক মাস পর তার আরেক বান্ধবী নাদীরাকে ও প্রেমের ফাঁদে ফেলে নিজ বাড়িতে নিয়ে যৌন চাহিদা মেটায়। ১৯৯৬ইং সালে দশম শ্রেণির ছাত্রী মোছাঃ জীবন আক্তারকে তিন ছেট জামা কাপড় বাঁকিতে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নিয়ে তার সাথে দৈহিক মিলন করে। ২০১২ইং সালে রায়কালী ইউনিয়নের আমবাড়ী কালাঞ্জ গ্রামের ইয়াচিন নামের এক কৃষকের স্ত্রী কে ধর্ষন করার সময় রাত্রী ২টায় স্থানীয়দের হাতে আটক হয়ে দুইলক্ষ নব্বই হাজার টাকা জরিমানার বিনিময়ে এবং রাজতৈকি ক্ষমতাবলে গভীর রাতেই উদ্ধার হয় শ্রী কৃষ্ণ বসাক যে ঘটনার বাস্তব স্বাক্ষী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা বেলাল মেম্বার ও আব্দুস সালাম মানিক।

শ্রী কৃষ্ণ বসাক ২০১৩ইং সালের ১৫জুন নিজ পিতার কাপড়ের দোকানেই ড্রেসআপ ট্রায়াল রুমে এক যুবতীর সাথে দৈহিক মিলনের সময় জনতার হাতে ধরা পরে। তার বিরুদ্ধে দুই বিঘে ধানী জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ করেন এলাকার রঘুনাথ বসাকের ছেলে শ্রী বিভুতি রায় নামের এক ব্যবসায়ী। কাপড়ের ব্যবাসর পাশাপাশি ধানের ব্যবসা শুরু করে ২০১৩ইং সালে। তার নিজের অপকর্ম এবং ব্যবসায়ীক কার্যক্রম নিরাপদে পরিচালনার জন্য রায়কালী ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগ এর রাজনীতিতে যোগদান করেন শ্রী কৃষ্ণ বসাক ।

কাপড় ব্যবসা, ধান ব্যবসা এবং পরিশেষে প্রাইভেটকার ও মাইক্রো’ ভাড়ার ব্যবসার আড়ালে এলাকায় সুদের ব্যবসার নৈরাজ্য গড়ে তোলে শ্রী কৃষ্ণ বসাক। সুদের ব্যবসায় ধংস করেছে শত শত পরিবার। সুদের ব্যবসার কাজে জড়িত করে তার নিজের মা বাবা এবং আপন চাচী শ্রীমতী সপ্তমী রানী বসাককে। তার সকল অপকর্ম পরিচালনার জন্য নিজস্ব স্বসস্ত্র ক্যাডার দল গড়ে তোলে রায়কালী বাজারে।
ট্রাক, সিএনজি ও অটোরিক্সার চাঁদাবাজি এবং সুদের টাকা ভাগাভাগির গড়মিল দেখা দেওয়ায় তার আপন চাচী শ্রীমতী সপ্তমী রানী বসাককে বিগত-১৯-০১-২০২০তারিখ আনুমানিক বেলা ১.৩০মিনিটে কয়েকজন পেশা জীবি সন্ত্রাসীদের সার্বিক সহযোগীতায় দেশীয় ধারালো চাপাতী দ্বারা গলা কেটে হত্যা শ্রী কৃষ্ণ বসাক ও তার তিন সহযোগী আলেপের ছেলে বাবু ময়েজ খা’র ছেলে সালাম এবং ঘেদু চোরের ছেলে বাবু।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, তাদের দুই পারিবারের সর্ম্পক ধরে রাখতে নিহত শ্রীমতী সপ্তমী রানী বসাককের স্বামী শ্রী বিশ^নাথ চন্দ্র বসাক এবং তার ছেলে শ্রী নারায়ন চন্দ্র বসাক গ্রেফতারকৃত আওয়ামী নেতা শ্রী কৃষ্ণকে জামিনে নেওয়ার চেষ্টা করছে। সোমবার আদালত তাকে জামিন না দিয়ে তিন দিনের রিমান্ড ঘোষনা করেছে । ঘটনাটিকে আদলতে মিথ্যা প্রমানিত করার জন্য আজ মঙ্গলবার বেলা ১১.৩০মিনিটে রায়কালী হিন্দু পরিবারের কিছু লোককে ৩৫০টাকা এবং খিঁচুড়ী খাওয়ানোর বিনিময়ে মহল্লায় একটি মিছিলও করে শ্রী কৃষ্ণ বসাক এর পরিবার। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।