বারির নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে আছে, হতাশায় পরীক্ষার্থীরা

জুলফিকার আলী জুয়েল :

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (বারি) নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে চরম অব্যবস্থাপনা দেখা দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দুই বছর পার হলেও নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় নি। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে ভাইভা বন্ধ থাকাই চিন্তার ভাজ পড়ছে পরীক্ষার্থীদের কপালে। বিগত সরকারের আমলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হিসেবে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হতে পারে এমন গুঞ্জনেও ভীত হচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা।

খোজ নিয়ে জানা যায়, বারিতে ২০২৩ সালের আগষ্ট মাসে বিভিন্ন পদে (গ্রেড-৫ থেকে গ্রেড-২০) মোট ১৯০ জন নিয়োগের জন্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গ্রেড-১০ থেকে গ্রেড-২০ পর্যন্ত অন্যান্য পদের নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে চূড়ান্ত নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও, নবম গ্রেডের ৩২ জন, গ্রেড-৫ এবং গ্রেড-৬ এর ১ জন করে মোট ৩৪ জনের নিয়োগ এখনও ঝুলে আছে। নবম গ্রেডের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদের লিখিত পরীক্ষা ২০২৪ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর, একই বছরের ১৫ জুলাই থেকে মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের সময়ে অনিবার্য কারনবশত পরীক্ষা স্থগিতের নোটিশে মৌখিক পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী তারিখে পরীক্ষা গ্রহণের তারিখ জানানোর কথা বলা হলেও এখনো নানা অজুহাতে বন্ধ রয়েছে মৌখিক পরীক্ষা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নবম গ্রেডের পরীক্ষার্থীরা জানান, আমাদের মৌখিক পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ ও কেন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না জানতে ইতিমধ্যে ৩-৪ বার বারির কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা শুধু মাত্র বলেন অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে, পরের মাসে ভাইবা হবে। কিন্তু অফিশিয়াল ভাবে কোন তারিখ এখনো ঘোষণা করেনি। ইতিমধ্যে ৬ মাসের বেশি সময় ধরে অনিশ্চিতভাবে তাদের কাছে পরীক্ষা নেওয়ার জন্যে ধরনা দিচ্ছি। কিন্তু পরীক্ষার তারিখ তারা দিচ্ছেন না। একই বিজ্ঞপ্তির অধীনে অন্যান্য পদের নিয়োগ সম্পন্ন হলেও নবম গ্রেডের নিয়োগ এখনও বাকি রয়েছে, এ নিয়েও সন্দেহ বাড়ছে। এই বিষয়ে একটি সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
যদি এই সমস্যার সমাধান দ্রুত না হয়, তাহলে নবম গ্রেডের প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

অন্য আরেক পরীক্ষার্থী জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই নিয়োগের জন্য অপেক্ষা করছি। বর্তমানে আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। নবম গ্রেডের সকল প্রার্থীরাই চরম হতাশায় ভুগছি। আর কতদিন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। অবিলম্বে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইউছুফ আখন্দ বলেন, ১০-২০ গ্রেডে বিভিন্ন স্টাফদের নিয়োগ গত বছরের জুলাই মাসেই সম্পন্ন হয়েছে। সায়েন্টিস্টদের শুধু লিখিত পরীক্ষা হয়েছে ভাইভা হয়নি। বর্তমান সময়ে আগের সরকারের নিয়োগ কোনোটাই থাকছে না, বাতিল হয়ে যাচ্ছে। বাতিলের পক্ষে ছাত্র এবং রাজনৈতিক উভয় দিক থেকেই প্রচুর চাপ আসছে। যেগুলো সম্পন্ন হয়েছে সেগুলোতে সমস্যা হচ্ছে না কিন্তু চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়া গুলোতে সমস্যা হচ্ছে। আগের বিজ্ঞপ্তির সময় বয়স সীমা ৩০ ছিল, কোটা পদ্ধতিও বলবৎ ছিল। এখন এগুলোও পরিবর্তিত হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সাথে এবিষয়ে আলোচনা চলছে খুব দ্রুতই সিদ্ধান্ত জানানো হবে। যদিও নিয়োগ প্রক্রিয়া বাদ হয় আমাদের চিন্তাভাবনা আছে যারা আগে আবেদন করেছিল তারা আবার পরীক্ষা দিতে পারবে, নতুন আবেদনের প্রয়োজন পড়বে না।

Leave a Reply